ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জহির শাহ্ -
প্রারম্ভিকা : যেখানে মাটি কথা বলে, রক্তও ঝরে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাটি শুধু কৃষিভূমি বা বসত-ভিটা নয়; এটি প্রজন্ম ধরে বয়ে চলা ইতিহাস, গল্প আর পরিচয়ের ধারক। এখানকার প্রতিটি ধূলিকণা যেনো পূর্বপুরুষদের পদচিহ্ন ধারণ করে আছে। কিন্তু এই পবিত্র মাটিই আজ পরিণত হয়েছে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের রণক্ষেত্রে। যেখানে অর্থ আর ক্ষমতার লালসা গ্রাস করছে মানবিকতাকে, জন্ম দিচ্ছে একের পর এক নির্মম ঘটনার। জমির ওপর এই নিয়ন্ত্রণ, বিত্ত আর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, যার ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে আসছে চরম দুর্ভোগ।
গত কয়েক মাস ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্তে জমির দখল ও মালিকানা নিয়ে সহিংস ঘটনা যেন এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ সরাইলে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শাশুড়ি ও ভাগ্নের হাতে নির্মমভাবে খুন হন দুইজন – এই ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন উপাখ্যান নয়, বরং এটি বৃহত্তর একটি সামাজিক ব্যাধির ইঙ্গিত। এরপর ১২ ও ১৫ জুন, ২০২৫-এ একই ধরনের সংঘর্ষে প্রায় ৩০-৫০ জন মানুষ আহত হন, যার ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মোতায়েন করতে হয়। এই ঘটনাগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, জমির জন্য কতটা ভয়াবহ ভূমিদস্যুতা চলছে, এবং এর মূলে রয়েছে গভীরতর সামাজিক ও আইনি জটিলতা যা এখন আর অনুধাবনের বাইরে নয়।
এই প্রতিবেদনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমি নিয়ে চলমান সংঘর্ষের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করবে, এর ভয়াবহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করবে, এবং এসব সংঘাত নিরসনে কিছু কার্যকরী ও বাস্তবসম্মত সমাধান প্রস্তাব করবে।
সমস্যার মূলে: জটিলাকার কারণগুলো
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমির সংঘাত কোনো সরল বিষয় নয়, বরং এটি বহু পুরনো এবং গভীর শিকড়যুক্ত সমস্যার ফলাফল। এই সংঘর্ষের নেপথ্যে রয়েছে একাধিক জটিল কারণ:
১. বংশানুক্রমিক বিরোধ ও ঐতিহাসিক বিভাজন
জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের একটি বড় অংশ আসে বংশানুক্রমিক বা পারিবারিক বিভাজন থেকে। ছোট ছোট জমি বারবার ভাগ হতে হতে এতটাই ক্ষুদ্রাকার ধারণ করেছে যে, এর সীমানা নিয়ে প্রায়শই জটিলতা সৃষ্টি হয়। এক ইঞ্চি জমিও যেখানে বহু প্রজন্মের স্মৃতি ও অধিকারের প্রতীক, সেখানে সামান্য সীমানা বিতর্কও বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে। পূর্বপুরুষদের মধ্যে থাকা সামান্য মতবিরোধ বা ভুল বোঝাবুঝি generations ধরে রাগ-ক্ষোভের জন্ম দেয়, যা সুযোগ পেলেই সহিংস রূপ ধারণ করে। আইনের চেয়ে "আমার পূর্বপুরুষদের জমি" এই আবেগপ্রবণ দাবি প্রায়শই বেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে, যা শান্তিপূর্ণ সমাধানে বাধা দেয়।
২. ভূমি আইন সম্পর্কে অজ্ঞতা ও দুর্বল আইনি কাঠামো
দেশের ভূমি আইন অত্যন্ত জটিল, এবং সাধারণ মানুষের কাছে তা প্রায়শই দুর্বোধ্য। জমির দলিলপত্র, খতিয়ান, নকশা এবং আইনি প্রক্রিয়া সম্পর্কে বেশিরভাগ মানুষের সঠিক ধারণা নেই। এই অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ভূমিদস্যু সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে। জমির দলিল সংক্রান্ত জটিলতা, ভূমি জরিপে ভুলভ্রান্তি বা সীমানা নির্ধারণে অসঙ্গতি - এই সবগুলোই লড়াইকে গোষ্ঠীগত সংঘাতে পরিণত করে। এছাড়াও, আইনি প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এবং দরিদ্র পরিবারগুলোর জন্য আইনি সহায়তার সীমিত সুযোগ এই সমস্যাকে আরও প্রকট করে তোলে। অর্থের অভাবে অনেকে বিচার পান না, যা তাদের হতাশ করে এবং বিকল্প পন্থায় সমাধানের দিকে ঠেলে দেয়।
৩. স্থানীয় পর্যায়ে সহিংসতার সংস্কৃতি ও আইনের প্রতি উদাসীনতা
জমির বিরোধ প্রায়শই দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়। লাঠি, রামদা, ফলা, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রের ব্যবহার এবং লুটপাট – এগুলি একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করে। সংঘর্ষের সময় উন্মত্ত জনতা আইন নিজের হাতে তুলে নিতে দ্বিধা করে না। অনেকেই আইনি পথে না গিয়ে নিজেদের ক্রোধে উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং প্রতিশোধের নেশায় মত্ত হয়ে পড়ে। এর পেছনে সামাজিক বিচারহীনতার সংস্কৃতিও অনেকাংশে দায়ী। যখন ন্যায়বিচার পাওয়া কঠিন হয়ে যায়, তখন মানুষ নিজস্ব উপায়ে প্রতিশোধ নিতে আগ্রহী হয়।
৪. রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতাধরদের প্রশ্রয়
জমির দখলদারদের প্রায়শই স্থানীয় বা জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক সমর্থন থাকে। ক্ষমতাধর ব্যক্তিরা এই ভূমিদস্যুদের আড়াল করে, যা তাদের আরও বেপরোয়া করে তোলে। স্থানীয় প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই এই রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে নিরুপায় হয়ে পড়ে। মামলা দায়ের হলেও তদন্তে গাফিলতি, দুর্বল চার্জশিট এবং আসামিদের দ্রুত জামিনে মুক্তি পাওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে। এই ধরনের রাজনৈতিক ছত্রছায়া অপরাধীদের বিচার থেকে বাঁচতে সাহায্য করে এবং সমাজে একটি বার্তা দেয় যে, আইন ক্ষমতাধরদের জন্য নয়, বরং সাধারণ মানুষের জন্য। এর ফলে ভুক্তভোগীরা আরও অসহায় বোধ করে এবং আইনশৃঙ্খলার প্রতি তাদের আস্থা কমে যায়।
ভয়াবহ পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাব: যেখানে জীবন মূল্যহীন
জমির জন্য এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সামাজিক কাঠামোতে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ বিপর্যয়। এর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবগুলো অত্যন্ত মর্মান্তিক:
মানবজীবনের অপূরণীয় ক্ষতি: সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক হলো, এই সংঘর্ষে অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু নির্দোষ প্রাণ। নিরীহ মানুষ, যারা হয়তো পারিবারিক ঐতিহ্যের অংশ হয়ে জমির মালিক ছিলেন, বা এমনকি যারা এই বিরোধের সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন, তারাও নির্মম হত্যার শিকার হচ্ছেন। অসংখ্য মানুষ গুরুতর আহত হয়ে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এই সংঘাত শুধু শারীরিক ক্ষতিই নয়, বরং মানসিক ট্রমাও সৃষ্টি করছে। পরিবারের সদস্যরা প্রিয়জন হারানোর শোক, আতংক এবং অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে বহু পরিবার তছনছ হয়ে যাচ্ছে। শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, নারীরা অনিরাপত্তায় ভুগছেন।
অর্থনৈতিক বিপর্যয়: জমির মূল্য, যা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সাহায্য করতে পারত, তা এখন সংঘাতের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জমি বিক্রি, নতুন বিনিয়োগ, বা কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির পরিবর্তে, জমি এখন কেবল খুন, ধ্বংস এবং ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কারণ। যে অর্থ জমির উন্নয়নে বিনিয়োগ করা যেত, তা এখন মামলা-মোকদ্দমা, চিকিৎসার খরচ এবং আইনি লড়াইয়ে ব্যয় হচ্ছে। এর ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র আরও শক্তিশালী হচ্ছে। অনেকেই বাধ্য হচ্ছেন নামমাত্র মূল্যে নিজেদের পৈতৃক জমি বিক্রি করে দিতে, যা তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাকে আরও দুর্বল করে তুলছে।
আইনশৃঙ্খলার পতন ও সামাজিক অস্থিরতা: প্রতিটি সংঘর্ষে পুলিশ মোতায়েন হলেও, অনেক ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা সীমিত থাকে। বহু ক্ষেত্রে গুরুতর ঘটনাগুলো যথাযথভাবে নথিভুক্ত করা হয় না, অথবা মামলা দায়ের হলেও কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দেখা যায়। এতে করে অপরাধীরা আরও উৎসাহিত হয় এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি মানুষের বিশ্বাস কমে আসে। সমাজে এক ধরনের নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়, যেখানে মানুষ নিজেদের অনিরাপদ মনে করে এবং বিচার পাওয়ার আশা হারায়। এই অস্থিরতা সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় হুমকি।
সমাধানের পথ ও ভাবনামূলক উপায়: আলোর দিশা
এই ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সমন্বিত এবং বহু-মাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এখানে কিছু কার্যকরী সমাধান প্রস্তাব করা হলো:
১. কার্যকর সালিশী ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা:
প্রচলিত সালিশী ব্যবস্থা প্রায়শই প্রভাবশালীদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য সালিশী ব্যবস্থা চালু করা জরুরি। নাগরিক সমাজ, উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে একটি শক্তিশালী সালিশী কমিটি গঠন করা যেতে পারে, যেখানে অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, আইনজীবী, শিক্ষক এবং respectedcommunity leaders-রা থাকবেন। এই কমিটি দ্রুত এবং নিরপেক্ষভাবে ছোটখাটো জমি বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সক্ষম হবে, যা আদালতে মামলা জমার চাপ কমাবে এবং সহিংসতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে। এই সালিশী ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত যাতে উভয় পক্ষ মানতে বাধ্য হয়, সে বিষয়ে আইনি কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে।
২. ‘মোবাইল আইনজীবী দল’ ও সহজ আইনি সহায়তা:
আদালতের মামলার বোঝা কমাতে এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে ‘মোবাইল আইনজীবী দল’ গঠন করা যেতে পারে। জেলা আইনজীবীদের একটি বিশেষ টিম গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় সপ্তাহে ২-৩ দিন তাদের উপস্থিতির ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই দল স্থানীয়দের বিনামূল্যে আইনি পরামর্শ দেবে, জমির দলিলপত্র যাচাইয়ে সাহায্য করবে এবং প্রয়োজনে মামলা দায়েরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। এর ফলে দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ সহজে আইনি সহায়তা পাবে এবং তাদের হয়রানি কমবে।
৩. আইনি শিক্ষার ব্যাপক প্রচার:
গ্রাম পর্যায়ে ভূমি আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। স্থানীয় ইউনিয়ন স্তরে স্কুল, কলেজ এবং মসজিদ-মন্দিরে নিয়মিত কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। এই কর্মশালায় ১০-১২ জন স্থানীয় সচেতন নাগরিক বা 'ভূমি বিষয়ক স্বেচ্ছাসেবক'কে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। এই প্রশিক্ষণে জমির দলিল, খতিয়ান, উত্তরাধিকার আইন, ভূমি জরিপ পদ্ধতি, এবং লোভের বশবর্তী হয়ে সংঘাতে না জড়ানোর গুরুত্ব সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেওয়া হবে। এই স্বেচ্ছাসেবকরা পরবর্তীতে তাদের জ্ঞান স্থানীয় মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন। এই প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল মাধ্যম, যেমন - মোবাইল অ্যাপ বা স্থানীয় কেবল টিভিতে ভূমি আইন সম্পর্কিত তথ্যচিত্র প্রচার করা যেতে পারে।
৪. রাজনৈতিক নেতাদের দায়বদ্ধতা ও নিয়ন্ত্রণ:
ভূমি বিরোধে রাজনৈতিক প্রভাব একটি বড় সমস্যা। এই প্রভাব কমাতে দলীয় কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যদের কাছে জমি-বিরোধের পুঙ্খানুপুঙ্খ প্রতিবেদন তুলে ধরা উচিত। রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের ক্যাডারদের এবং সমর্থকদের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে এবং ভূমিদস্যুতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। জনসম্মুখে তাদের দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে এবং ভূমিদস্যুদের পৃষ্ঠপোষকতা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এই সমস্যার সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য উৎসাহিত করতে হবে।
৫. ডিজিটাল ও ফিল্ড রিপোর্টিং ইন্টার্ন প্রোগ্রাম:
সাংবাদিকতা এই সমস্যাকে সামনে আনার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হতে পারে। তরুণ সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল ও ফিল্ড রিপোর্টিং ইন্টার্ন প্রোগ্রাম চালু করা যেতে পারে। এই প্রোগ্রামের আওতায় তারা মাঠে গিয়ে ১০টিরও বেশি সাক্ষাৎকার, জমির দলিলপত্র যাচাই এবং পারিবারিক ইতিহাস ব্যবহার করে প্রমাণভিত্তিক প্রতিবেদন তৈরি করবেন। এই ধরনের গভীর এবং বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন শুধু জনমতই তৈরি করবে না, বরং সরকারের নজরেও আনবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করবে। এই প্রোগ্রামগুলি সাংবাদিকতার মান উন্নয়নেও সাহায্য করবে এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় আগ্রহ তৈরি করবে।
শান্তির পথে এক দৃঢ় পদক্ষেপ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জমির জন্য চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘাত কেবল স্থানীয় সমস্যা নয়, এটি সমগ্র বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। এই সংকট নিরসনে একক কোনো সমাধান নেই; প্রয়োজন একটি সামগ্রিক, সমন্বিত এবং দীর্ঘমেয়াদী উদ্যোগ। সরকার, স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল এবং সর্বোপরি সাধারণ জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। যদি এই সংঘাতের মূলোৎপাটন করা না যায়, তবে তা শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া নয়, দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়বে।
আমরা যদি আমাদের মাটি, আমাদের ঐতিহ্য এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে চাই, তবে জমিকে লালসার বস্তুতে পরিণত না করে জীবন ও শান্তির আশ্রয়স্থল হিসেবে ফিরিয়ে আনতে হবে। আসুন, আমরা সকলে মিলে একটি শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ হই, যেখানে জমি হবে জীবন গড়ার ভিত্তি, রক্তক্ষয়ের কারণ নয়।