খেলার মাঠে ডেস্ক
৬১ বল খেলে ৬২ রান করেছেন। ৯টি বাউন্ডারি ও ১টি ছক্কার সে ইনিংসে দলের মোট রানের (১৬৭) এক-তৃতীয়াংশের বেশিই তাঁর। সব মিলিয়ে ৮১ মিনিট মাঠে দাঁড়িয়ে দেখেছেন রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেটের আচরণ, দেখেছেন পর পর দুই ওভারে নাজমুল হোসেন আর লিটন দাসের আউটে বিপর্যয়ের শুরুটাও।
ওপেনার তানজিদ হাসান এরপর যদিও নিজেই জানিথ লিয়ানাগের দুর্দান্ত ক্যাচ হয়ে ৫ রানে ৭ উইকেট হারানোর ‘মহামারি’র অংশ হয়ে গেছেন, তবু দলের হয়ে সর্বোচ্চ রান করায় প্রেমাদাসার উইকেট সম্পর্ক ভালো ধারণা থাকার কথা তাঁরই।
আজ সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা এই ওপেনারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, আগামীকালের দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে সতীর্থদের জন্য তাঁর কী বার্তা, প্রেমাদাসার উইকেটে ভালো ব্যাটিং করার জন্য কী তাঁর পরামর্শ?
জবাবে তানজিদ জোর দিয়েছেন একটা বিষয়ের ওপরই, উইকেটে গিয়ে থিতু হওয়া ব্যাটসম্যানদের টিকে থাকতে হবে, চেষ্টা করতে হবে শেষ পর্যন্ত খেলে আসার, ‘এই উইকেটে যারা সেট হবে তাদের অনেক লম্বা ইনিংস খেলতে হবে। আমাদের একটাই বার্তা থাকবে সামনে ম্যাচে ব্যাটসম্যানের জন্য। নতুন ব্যাটসম্যান যারা উইকেটে যায় তাদের একটু সময় নিয়ে ব্যাটিং করা এবং যারা সেট থাকবে, তাদের শেষ পর্যন্ত খেলার চেষ্টা করতে হবে।’
প্রথম ম্যাচের বিপর্যয়ের অভিজ্ঞতা থেকে তানজিদ বলেছেন, ‘আমি আর-শান্ত ভাই যেরকম সেট ছিলাম, আমরা যদি আরেকটু থাকতে পারতাম, অন্তত ৫-১০ ওভার থাকতে পারতাম, তাহলে ম্যাচটা অনেক ভালোভাবে বের হয়ে আসত। পরের ব্যাটসম্যানদের কাজও অনেক সহজ হয়ে যেত।’
অবশ্য নিজেদের একটু দুর্ভাগাও ভাবছেন তিনি, ‘আমরা কিছুটা দুর্ভাগা। ভালো একটা রান আউট করেছে ওরা, ভালো একটা ক্যাচ নিয়েছে। এটা টার্নিং পয়েন্ট ছিল। সেখান থেকে যদি আমরা অন্তত দুটি ৩০-৪০ রানের জুটিও গড়তে পারতাম, ম্যাচটা সহজ হয়ে যেত।’
তা করতে পারেননি বলেই দলের হয়ে সে ম্যাচে সবচেয়ে ভালো ব্যাটিং করেও তানজিদের অতৃপ্তি, ‘আমার মনে হয় না আমি ভালো খেলেছি। কারণ দলের যখন যেটা দরকার ছিল সেট আমি পূরণ করতে পারিনি। যদি সেটা পূরণ করতে পারতাম তাহলে হয়তো বলতে পারতাম যে আমি ভালো খেলেছি, দলের জন্য কিছু করতে পেরেছি।’
২৪৪ রান তাড়া করতে নেমে ৭৭ রানের হারে ওই ‘মহামারি’—সিরিজের দ্বিতীয় দ্বিতীয় ওয়ানডের আগে ঘুরেফিরে প্রথম ওয়ানডের দুঃস্মৃতি ফিরে এলেও তানজিদ আশা হারাতে চাচ্ছেন না, ‘সিরিজে এখনো আমাদের ফিরে আসার সুযোগ আছে। তিন ম্যাচের সিরিজ, এক ম্যাচ হয়েছে। পরের ম্যাচ আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি ফিরে আসতে পারি, আমরা সিরিজে ভালোভাবেই থাকব।’
কাল টিম মিটিংয়ে প্রথম ম্যাচের ভুল-ত্রুটি নিয়ে লম্বা আলোচনাই করেছেন ডাক্তার দেখাতে আজ দুদিনের জন্য ইংল্যান্ডে যাওয়া কোচ ফিল সিমন্স। সেখানে কোচও বলেছেন একই কথা। ‘গত ম্যাচের ব্যাপারে আমাদের লম্বা আলোচনা হয়েছে, কোচ সেখানে কিছু কথা বলেছেন। গত ম্যাচে আমরা যেরকম ভেঙে পড়েছি— তাতে একটাই বার্তা এ রকম উইকেটে যারা সেট হবে তাদের শেষ করতে হবে। কারণ উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন, শ্রীলঙ্কারও ভালো স্পিনার আছে।’
দলের প্রতি সিমন্সের বার্তা আছে আরও একটি—শ্রীলঙ্কার লেগ স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙার বিপক্ষে বাঁহাতিদেরই বেশি খেলার চেষ্টা করতে হবে। প্রথম ওয়ানডেতে ৭.৫ ওভার বোলিং করে মাত্র ১০ রানে ২ মেডেন সহ ৪ উইকেট নিয়ে হাসারাঙাই ভেঙে দিয়েছিলেন বাংলাদেশের ইনিংসটা।