নড়াইল সদর উপজেলার চর শালিখা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলা ও হুমকির কারণে নারী ও শিশুরা দিন কাটাচ্ছেন ভয়ে। কেউ কেউ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে চলে গেছেন, আর পুরুষশূন্য পরিবারগুলো চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকায় প্রতিপক্ষের দাপট বেড়ে চলেছে এবং বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, দুই মাস আগে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে দক্ষিণপাড়ার আজিজার শেখ সমর্থকরা গ্রাম থেকে সরে গিয়েছিলেন। চলতি মাসে পুলিশ ও রাজনৈতিক-মধ্যস্থতার মাধ্যমে আপস-মীমাংসা হওয়ার পর তারা গ্রামে ফেরেন। কিন্তু মশিয়ার শেখ গ্রুপের মধ্যে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে ওঠে। গত ১৫ আগস্ট সদরের সীতারামপুর ব্রিজে মশিয়ার গ্রুপের মুরাদ শেখকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এরপর মশিয়ার নবীর গ্রুপের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আজিজার গ্রুপের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পাল্টা আক্রমণে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ ৩০ জন আহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় নড়াইল সদর থানায় মামলা হওয়ার পর আজিজার শেখের সমর্থকরা গ্রাম ছাড়েন। সুযোগ নিয়েই মশিয়ার গ্রুপের সদস্যরা ১৬টি বাড়িতে হামলা চালায়। সরেজমিনে দেখা যায়, গ্রামের একাধিক দোকান ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। একটি দোকানের টিনের বেড়া চৌচির হয়ে গেছে, ভেতরে ভাঙা ফ্রিজ, টিভি ও আলমারি পড়ে আছে এলোমেলোভাবে। রান্নাঘরের হাড়ি-পাতিলও রক্ষা পায়নি।
জসীমের স্ত্রী রিয়া বেগম জানান, পরিবারের পুরুষরা হাট বাজারে থাকায় তারা ঘরে ঢুকে যা নিতে পেরেছে তা নিয়ে গেছে। ছেলে-মেয়েসহ থাকার পরিবেশ নেই। রাত হলে বাড়িতে থাকা সম্ভব হয় না।
ক্ষতিগ্রস্ত রোকেয়া বেগম বলেন, মশিয়ার গ্রুপ আমার ছেলেটির দোকান ভাঙচুর করেছে। পাঁচ লাখ টাকার মালামাল লুটপাট করা হয়েছে। আমাদের রাস্তা ঘাটে চলাচল করতে দিচ্ছে না। প্রতিপক্ষের লোকজন সব সময় রাস্তায় উপস্থিত থাকে।
অভিযুক্ত মশিয়ার শেখের ভাইপো মেহেদি জানান, দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে, কিন্তু বাড়ি ভাঙচুর নিয়ে অভিযোগ করা হয়নি।
নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে দুটি মামলা হয়েছে। বাড়ি ভাঙচুর সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।