কুষ্টিয়া প্রতিবেদক :
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাতে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) আবাসিক হলে এক নবীন ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতনের অভিযোগের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা। তিনি পরিসংখ্যান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্রী। এসময় তার সঙ্গে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমহ আরও কয়েকজন ছিলেন বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগী ছাত্রী ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে অধ্যয়নরত।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে করা লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রথমবর্ষের ক্লাস শুরুর আগে এক সিনিয়রের কক্ষে (৩০৬ নম্বর) গেস্ট হিসেবে থাকতেন ওই ছাত্রী। ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই কক্ষে যান ফিন্যান্স বিভাগের তাবাসসুম। এসময় নবীন শিক্ষার্থীদের কারা দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে থাকেন তা জানতে চান। ভুক্তভোগী ছাত্রী হাত তোলেন। তিনি হলে ওঠার আগে না জানানোয় চটে যান এবং তাকে হলের কক্ষে (প্রজাপতি-২) দেখা করতে বলেন তাবাসসুম।
ভুক্তভোগী অসুস্থ থাকার কারণে যেতে অপারগ হলে দেখা না করার কারণে শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ক্লাসে ফের বকাঝকা করেন। পরে সেদিন রাতে দেখা করলে ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরার কাছে নিয়ে যান। সেখানে রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত নানাভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে ভুক্তভোগী একপর্যায়ে তাদের পা পর্যন্ত ধরেন।
পরদিন (রোববার) ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে ‘বেয়াদবি’ ও ‘অবৈধভাবে হলে থাকা’র অভিযোগ তুলে তাকে হল থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে প্রাধ্যক্ষসহ অন্যান্যরা এসে তাকে হলে তুলে অন্তরার দায়িত্বে দিয়ে যান। একই সঙ্গে সিনিয়রদের সঙ্গে ‘বেয়াদবি’ করবেন না বলেও মুচলেকা দেন ভুক্তভোগী। পরে রাত ১১টার দিকে তাবাসসুম ফের ভুক্তভোগীকে গণরুমে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে অন্তরাসহ ৫-৬ জন ছাত্রী ছিলেন। তারা রাত প্রায় ৪টা পর্যন্ত ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করেন। মারধর, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, বিবস্ত্র করাসহ নানাভাবে তাকে নির্যাতন করা হয়।
ভুক্তভোগী বলেন, “গণরুমে এনে সবাই মিলে আমাকে মেরেছে। রাত ১১টা থেকে রাত প্রায় ৪টা পর্যন্ত আমাকে থাপড়াইছে, গায়ে-মাথায় মেরেছে, পায়ে পিন ফুটিয়েছে, অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেছে, জামা খুলতে বলেছে। আপুরা প্রভোস্ট স্যারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয় লিখে দিয়ে বলেছে, ‘হাসবি আর এগুলা বলবি’। সব তারা ভিডিও করে রেখেছে।”
