ক্রীড়াঙ্গনে দেশের উদীয়মান তরুণ ক্রীড়াবিদদের অধিক অংশগ্রহণ নিশ্চিতের লক্ষে বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের (বিওএ) উদ্যোগে দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের নামে ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩’।
আজ বুধবার বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশনের ডাচ বাংলা অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে গেমসের বিস্তারিত বর্ণনা করেন বিওএ মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা।
তিনি জানান, ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো সফলভাবে যুব গেমসের আয়োজন করে বিওএ। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রতি চার বছরে একটি বাংলাদেশ গেমস এবং একটি যুব গেমস আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়। তবে সেটা বাস্তবায়নে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় করোনা মহামারি। আপাতত আমরা এই পিরিস্থিতি থেকে মুক্ত হয়ে আবারো ক্রীড়াঙ্গনে প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের নতুন সভাপতির সক্রিয় তত্বাবধানে আমরা জাতীয় যুব গেমসের দ্বিতীয় আসর আয়োজন করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩” এর মিডিয়া এবং পাবলিসিটি উপ-কমিটির চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ, গেমসের মূখ্য সমন্বয়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, গেমসের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য-সচিব আশিকুর রহমান মিকু, টেকনিক্যাল উপ-কমিটির সদস্য-সচিব এ কে সরকার, বাংলাদেশ অলিম্পিক এসোসিয়েশন ও বিভিন্ন ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের আধুনিক ক্রীড়াঙ্গনের রূপকার শেখ কামাল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র। স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনকে যুগোপযোগী করার প্রয়াস চালিয়ে গেছেন তিনি আমৃত্যু। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শেখ কামাল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধেও রেখেছেন অসামান্য অবদান। এবারের আসর সেজন্যই আমরা তাঁর নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ফলে যুব গেমসের দ্বিতীয় আসরের নামকরণ করা হয়েছে “শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩”।
এবারের গেমসও জেলা, বিভাগ ও জাতীয় এই তিন স্তরে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ১৭ বছর। প্রথম স্তরে দেশের সকল উপজেলার খেলোয়াড়রা ৬৪টি জেলায়, দ্বিতীয় স্তরে ৬৪টি জেলা দল ৮টি বিভাগীয় শহরে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করেছে। এবার চুড়ান্ত বা জাতীয় পর্যায়ে ০৮টি বিভাগীয় দল ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করবে।
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে আয়োজনের লক্ষে ক্রীড়াবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমপিকে প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও মাননীয় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল,এফসিএ, এমপিকে চেয়ারম্যান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব মো: জাহিদ আহসান রাসেল,এমপি এবং বিওএর সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি(বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডিকে কো-চেয়ারম্যান করে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কমিটি, ০১টি স্টিয়ারিং কমিটি ও ১৩টি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গেমসের চুড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, রবিবার সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকার সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেছেন। সমাপনী অনুষ্ঠান একই স্টেডিয়ামে ০৪ মার্চ বিকাল ৪:৩০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হবে। সমাপনী অনুষ্ঠানে বিওএ'র সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি(বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন।
২০১৮ সালে প্রথমবার সফলভাবে যুব গেমস অয়োজন করা হয়। প্রথম আসরে ২১টি ডিসিপ্লিনে প্রায় ৫০ হাজার ক্রীড়াবিদ, প্রশিক্ষক/টিম ম্যানেজার, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল, ক্রীড়া সংগঠক অংশ নেন। তরুণ ক্রীড়াবিদদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ সম্প্রসারণের জন্য বিওএ ‘শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩’এর ডিসিপ্লিন সংখ্যা একক ও দলীয়সহ ২৪টিতে উন্নীত করেছে। গেমসের দ্বিতীয় আসরে প্রথম, দ্বিতীয় ও চুড়ান্ত তথা জাতীয় পর্যায় মিলিয়ে আনুমানিক ৬০ হাজার ক্রীড়াবিদ, প্রশিক্ষক/টিম ম্যানেজার, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল, ক্রীড়া সংগঠক সম্পৃক্ত রয়েছেন।
মোট ১৯৩ টি ইভেন্টে ১৯৩টি স্বর্ন, ১৯৩ টি রৌপ্য এবং ২৮৭ টি তাম্র পদকের জন্য ৪,০০০ (চারহাজার) ক্রীড়াবিদ চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করবেন।
শেখ কামাল ২য় বাংলাদেশ যুব গেমস ২০২৩ উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য মশাল র্যালি আয়োজিত হবে। বিওএ সভাপতি ও সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি(বার), ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি প্রাঙ্গণের মঞ্চে মশাল প্রজ্জ্বলন করবেন। গেমসের মশাল সেখান থেকে কয়েকটি জেলা হয়ে বিওএ ভবনে আসবে। বিওএ ভবন থেকে ঢাকার আবাহনী লিমিটেড ক্লাবে অবস্থিত শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে আনা হবে। সেখান থেকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানস্থল বনানী আর্মি স্টেডিয়ামে নেওয়া হবে। গেমসের উদ্বোধনে মশাল জ্বালাবেন স্প্রিন্টার ইমরানুর রহমান ও কারাতেকা মারজান আক্তার।
কোভিড প্রটোকল বিষয়ে গেমস উপলক্ষে গঠিত মেডিকেল কমিটি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
প্রতিযেগিতার প্রথম পর্ব (আন্ত: উপজেলা) ০২-১০ জানুয়ারী, দ্বিতীয় পর্ব (আন্ত: জেলা) ১৬-২২ জানুয়ারী অনুষ্ঠিত হয়েছে। চুড়ান্ত পর্ব ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ৪ মার্চ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
গেমসের চুড়ান্ত পর্বের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী ক্রীড়াবিদদের পক্ষে শপথ বাক্য পাঠ করবেন বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। বিচারকদের পক্ষে শপথবাক্য পাঠ করবেন জাতীয় ক্রীড়া পুরষ্কার প্রাপ্ত সাবেক ফিফা এলিট রেফারি জনাব তৈয়ব হাসান শামছুজ্জামান।
গেমসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব ব্যাংকস। এছাড়াও সাইফ পাওয়ারটেক ও ওয়ালটন পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।
