আবহাওয়া ডেস্ক :
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজার মানুষ মারা যাবার পরও দফায় দফায় শক্তিশালী ভূমিকম্প মারাত্মক ভাবে আঘাত হারছে গত কয়েক দিন ধরেই। এছাড়া তাজাকিস্তান আর জাপানেও আঘাত করেছে ভূমিকম্প, যে কারণে বিশ্ব জুড়ে বিপর্যয়ের পর প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
রিখটার স্কেলে যদি সাত মাত্রার ভূমিকম্প হয়, সেই ধাক্কা সামলাতে পারবে তো ঢাকা? তেমনটি হলে ধ্বসে পড়বে কয়েক হাজার ভবন, মৃত্যু হবে অন্তত দুই থেকে তিন লাখ মানুষের৷ এমনটাই মনে করছেন ভূমিকম্প বিশ্লেষকরা৷
২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেশ৷ সেবার আতঙ্কেই মারা যান ৬ জন৷ গত ১৫ বছরে ছোট-বড় ভূমিকম্পে ১৪১ বার কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ৷ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছোট ভূমিকম্পগুলো বড় ভূমিকম্পের আলামত৷ আবার বড় ভূমিকম্পের শত বছরের মধ্যে আরেকটি বড় ভূমিকম্প হয়৷ সে দিক থেকেও আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের ভূমিকম্পের আশঙ্কা প্রকট৷
ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের পর নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে প্রয়োজনীয় খোলা জায়গা নেই ঢাকা শহরে৷ ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও রাজধানীর বেশির ভাগ ভবন মালিকই তা মানছেন না৷ এ বিষয়ে আইন হওয়ার প্রায় ১৫ বছর পরও এটি ঠিকমতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় রাজধানীতে বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবং ভূমিকম্পে ক্ষতির আশঙ্কা৷
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘গত দু-তিন বছরে দেশে ভূমিকম্প অনেক বেড়েছে৷ আবার ১০০ বছরের মধ্যে আমাদের এখানে তেমন বড় ভূমিকম্প হয়নি৷ এটা আতঙ্কের বিষয়৷ তার মানে, ছোট এসব কম্পন শক্তি সঞ্চয় করছে৷ ফলে সামনে বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা আছে৷ তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর চেয়ে ছোট, অর্থাৎ, রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবন ধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও গ্যাসলাইন এ নগরকে একটি অগ্নিকূপে পরিণত করতে পারে৷ কয়েক হাজার ভবন ধ্বসে পড়বে৷ মৃত্যু হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের৷ কারণ, আমাদের ভবনগুলো এখনও নিরাপদভাবে তৈরি হচ্ছে না৷’’
