খেলার প্রতিবেদক :
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যখন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে খেলতে নামবে ঠিক তখন সবচেয়ে বড় খবর ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালের মধ্যকার দ্বন্দ্ব।
দুই দিন আগেই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাকিব-তামিম গ্রুপিং নিয়ে বোমা ফাঁটিয়েছেন। যে বিষয়টি বহু দিন ধরেই বিসিবির পর্দার আড়ালে লুকানো ছিল। এবার সেটা সামনে আনলেন বিসিবি বস। এরপর আজ তামিম নিজেই বাধ্য হলেন মিডিয়া সামনে কথা বলতে। মুলত তারকা দুই বিশ্ব তারকা ক্রিকেটারকে নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের চাঞ্চল্যকর মন্তব্যের পরই দেশের ক্রিকেটে আলোচনার তুঙ্গে সাকিব-তামিম ইস্যু।
সাকিব-তামিমের মধ্যে সম্পর্ক কেমন, তা নিয়ে কয়েক দিন আগেই একটি টিভি চ্যানেলে ফুটেজ দেখানো হয়। এরপরই টনক নড়ে বিসিবির। এরপরই বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জনপ্রিয় ক্রীড়াভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এই দুইজনের সম্পর্কে নষ্ট বিষয়টি বিষয়টি তুলে ধরেন।
অবশেষে সাকিবের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ইস্যুতে আজ রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রেস কনফারেন্স রুমে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
তামিম ইকবাল জানান, ‘সবকিছু স্বাভাবিক আছে। দলের আবহাওয়া খুব ভালো। আজ না, অনেকদিন। রেজাল্টও দেখছেন। শেষ পাঁচ বছর ধরে ওয়ানডেতে ভালো ছিলাম। যখন ড্রেসিং রুম খুশি থাকে, তখন এমন ফল আসে। সবকিছুই স্বাভাবিক আছে।’
তামিম বলেন, ’আমার কাছে মনে হয় সবচেয় গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো আমি, সাকিব যখন বাংলাদেশ দলের জার্সি পরে মাঠে নামি তখন আমি আমার সেরাটা দেই, সে তার সেরাটা দেয়। আমি যখন অধিনায়কত্ব করি তখন যেকোনো পরামর্শ চাই। সে আমাকে পরামর্শ দেয়। আবার সে যখন অধিনায়কত্ব করে তখন তার কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হলে আমি সেটার জন্য প্রস্তুত থাকি। এর বাইরে কিছু নেই।’
গ্রুপিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তামিম ইকবাল বলেন, '১৭ বছর ধরে জাতীয় দলের হয়ে খেলছি। দলের মধ্যে কখনো কোনো গ্রুপিং দেখেননি। আমি ১৭ বছর যাবত জাতীয় দলে খেলছি। কোনো সময় কোনো গ্রুপিং দেখিনি। এখনও, গত তিনদিন যাবত আমরা প্র্যাকটিস করলাম। এখনও তো কোনোরকম কোনো গ্রুপিং চোখে পড়েনি। প্র্যাকটিসে এসে আমরা সবাই মজা করছি, হাসি ঠাট্টা করছি। তবে হ্যাঁ, আমি গত ৬ মাস দলের সাথে ছিলাম না। এই ৬ মাসে কোনো কিছু (গ্রুপিং) বেড়ে উঠলে তো তা আমার জানা থাকার কথা নয়। তবুও আমি বলবো, গ্রুপিংয়ের কোনো সম্ভাবনা নাই। তার কারণ হলো, গত তিনদিন আমরা একসঙ্গে প্র্যাকটিস করছি। সবকিছুই নরমাল। আমরা খুবই আনন্দঘন পরিবেশে প্র্যাকটিস করছি।’
এর আগে ক্রিকবাজকে বিসিবি সভাপতি পাপন বলেন, ‘আমি আপনাকে বলতে পারি, এটা কোনো স্বাস্থ্যকর ড্রেসিংরুম নয়। এই ব্যাপারটা (সাকিব ও তামিমের মধ্যে সম্পর্ক) এমন নয় যে আমি সমাধানের চেষ্টা করিনি। আমি তাদের দুজনের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বুঝেছি তাদের যে সমস্যাগুলো আছে, তা নিষ্পত্তি করা সম্ভব নয়। এটা আমার পর্যবেক্ষণ।’
বিসিবিপ্রধান আরও যোগ করেন, ‘তাদের (সাকিব ও তামিম) উভয়কে একটা বার্তা দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, আমি জানি না তোমাদের মধ্যে কী চলছে, তবে তোমরা যে ম্যাচ বা সিরিজ খেলছো সেখানে যেন এই সমস্যাগুলো সামনে না আসে। তারা দুজনেই এমন শর্ত মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন।’
পাপন জানান আগে থেকে বর্তমানে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ কিছুটা উন্নত হয়েছে, ‘তাদের (সাকিব ও তামিম) মাঠে এবং ড্রেসিংরুমে কথা বলতে হয়। ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা খারাপ ছিল, তবে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। এই ইংল্যান্ড সিরিজ থেকেই আমি তাদের সম্পর্কে পরিবর্তন চাই। তারা বাইরে যা করে তা আমার জন্য চিন্তার বিষয় নয়।’