যখন রাজনীতি পেছনে ছায়া ফেলে, তখন ভবিষ্যতও কাঁপে
ইতিহাস কি নিজেকে আবারও পুনরাবৃত্তি করতে যাচ্ছে?
তেহরান থেকে তেল আবিব, ওয়াশিংটন থেকে ওয়াল স্ট্রিট—সবখানেই এখন শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি।
আর ঠিক এই সময়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নামছেন কূটনৈতিক ব্যাটলফিল্ডে—ইরানের সামনে রেখে দাঁড় করিয়েছেন দুটি পথ:
🔹 আলোচনার টেবিল
🔹 অথবা যুদ্ধের ট্রিগার!
ট্রাম্পের কণ্ঠে দ্বৈত বার্তা
“এটাই ইরানের দ্বিতীয় সুযোগ।” এই কথাটির ভেতরেই যেন একসাথে রয়েছে শান্তির প্রস্তাব ও হুমকির ছায়া। বিশ্ব গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, ট্রাম্প তার বিশ্বস্ত প্রতিনিধি স্টিভ উইটকফ-কে পাঠিয়েছেন ওমানে। উদ্দেশ্য—ইরানকে আবারো পরমাণু চুক্তির পথে ফেরানো। কিন্তু একদিকে শান্তির প্রস্তাবের মাঝেও ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন—সময় ফুরিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ, আলোচনার দরজা খোলা থাকলেও পাশে দাঁড়িয়ে আছে সামরিক প্রস্তুতির দরজা।
“ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চাই না, চাই স্থায়ী সমাধান। কিন্তু ধৈর্য সীমিত।”— ডোনাল্ড ট্রাম্প
যুদ্ধের বাস্তবতা: ইসরায়েল বনাম ইরান
২০২৫ সালের মে ও জুন—এই দু’মাসেই একাধিকবার আকাশ কাঁপিয়ে উঠেছে যুদ্ধের গর্জন।
🔺 ইসরায়েল চালিয়েছে হাই-প্রিসিশন এয়ারস্ট্রাইক
🔻 ইরান পাল্টা দিয়েছে ৩৭০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপে
উভয়পক্ষেরই হয়েছে প্রাণহানি, ধ্বংস আর হতাশা।তেহরান বলছে, তাদের আত্মরক্ষা বৈধ।
তেল আবিব বলছে, তারা জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষা করছে। এই দাবি-পাল্টা দাবি চলাকালে, ট্রাম্প যেন দাঁড়িয়ে আছেন মঞ্চের ঠিক মাঝখানে—এক হাতে শাদা পতাকা, আরেক হাতে লাল বোতাম।
কূটনীতি বনাম শক্তি—ট্রাম্পের পুরনো খেলা, নতুন মোড়?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই কৌশল নতুন কিছু নয়। তাঁর পূর্বতন প্রশাসনেও আমরা দেখেছি "স্টিক অ্যান্ড ক্যারট" কৌশল—একদিকে আলোচনার প্রলোভন, অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞার হুমকি। এই মিশ্র বার্তায় ইরান কতটা নরম হবে, তা এখনো বলা যাচ্ছে না। কিন্তু একটা বিষয় পরিষ্কার—ট্রাম্প চাইছেন একসাথে শান্তিপূর্ণ চুক্তি ও শক্তির প্রদর্শন।
“আমি চাই না আরও মৃত্যু, চাই না ধ্বংস। এখনই সময় সিদ্ধান্ত নেওয়ার।”— ট্রাম্প, সিএনএন সূত্রে
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: কূটনীতির সময়, নাকি সংঘর্ষের?
✦ জাতিসংঘ বলছে: “সংঘর্ষ এড়াতে হবে।”
✦ ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে: “চুক্তি পুনরুজ্জীবন জরুরি।”
✦ রাশিয়া ও চীন বলছে: “একতরফা চাপ না দিয়ে দ্বিপাক্ষিক বোঝাপড়া দরকার।”
এমনকি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-ও ইঙ্গিত দিয়েছে: “আমরা আলোচনায় বাধা নই। কিন্তু তা হতে হবে সম্মান ও সার্বভৌমত্বের ভিত্তিতে।”
বিশ্ব রাজনীতির চুলায় এখন যে ফোঁড়া ফুটছে, তা একদিন বিশ্ব অর্থনীতি, জ্বালানি নিরাপত্তা, এমনকি বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলবে।
তেল উত্তোলন, অস্ত্র বাণিজ্য, ভূ-রাজনীতি—সব মিলিয়ে এই এক সংকট মুহূর্তে ট্রাম্পের দ্বৈত বার্তা শুধু ইরান নয়, পুরো বিশ্বের দিশা নির্ধারণে ভূমিকা রাখতে পারে।
দুরন্ত বিডি-এর বিশ্লেষণ: টেবিল না ট্রিগার?
ট্রাম্প এক প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন, যার উত্তর এখন ইরানকেই দিতে হবে।
সেই উত্তর হবে হয় শান্তির, না হয় অস্থিরতার। আর আমাদের সবার জন্য প্রশ্ন রয়ে যাবে—
"বিশ্ব কি আবার ২০০৩-এর মতো নতুন যুদ্ধ দেখবে, নাকি এবার বিজয় হবে বুদ্ধির, শান্তির?"