Sunday, 15 June 2025

সিএনএন’র বক্তব্য - ইরানে সামরিক অভিযানে গোপন ‘মদদ’ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ইরানজুড়ে বিস্ময়কর সামরিক অভিযানে একাধিক পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, সেনা ঘাঁটি ও বেসামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শুক্রবার এই হামলার সূত্রপাতের পর দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি আঘাতে পরিস্থিতি রক্তক্ষয়ী রূপ নিচ্ছে।


ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে দুই শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দেশটির উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তারা, যাদের মধ্যে ২০ জন কমান্ডার এবং ১২ জন পরমাণুবিজ্ঞানী রয়েছেন বলে দাবি করেছে ইসরায়েল।


 
হামলার মাত্রা ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আজ রবিবার সিএনএনের একটি লাইভ প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযান কয়েকদিনের নয়, বরং কয়েক সপ্তাহব্যাপী চলবে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই অভিযানে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি না জড়ালেও পরোক্ষভাবে সমর্থন জানাচ্ছে।


হোয়াইট হাউস এবং ইসরায়েলি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সিএনএন জানায়, ইরানের বিরুদ্ধে এমন অভিযানে মার্কিন প্রশাসনের ‘প্রাইভেট আলোচনায়’ কোনো আপত্তি ছিল না।


ইসরায়েলি এক শীর্ষ কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন প্রশাসন এই দীর্ঘমেয়াদি অভিযান সম্পর্কে জানত এবং তাতে মৌন সম্মতি দিয়েছিল।


এদিকে হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানান, প্রশাসন ইসরায়েলের পরিকল্পনার ব্যাপারে সচেতন এবং পরোক্ষভাবে তা সমর্থন করছে। তিনি বলেন, এই সংঘাত কতদিন চলবে, তা নির্ভর করছে ইরানের প্রতিক্রিয়ার ওপর।


ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ট্রাম্প প্রশাসনের দৃঢ় বিশ্বাস, চলমান সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান একমাত্র সম্ভব যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে।


অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র জড়িত নয়। তিনি লেখেন, গতকাল শনিবার রাতে ইরানে হামলার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।


ইরান অবশ্য এ অভিযোগ করছে যে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার পশ্চিমা মিত্ররাও ভূমিকা রাখছে না শুধু, বরং বিভিন্নভাবে সহায়তা করছে। এর জেরে তেহরান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, ইসরায়েলকে সহায়তাকারী দেশগুলোকে লক্ষ্য করে হামলার পথেও হাঁটতে পারে তারা।


এই প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প আবারও কঠোর অবস্থান তুলে ধরে বলেন, “ইরান যদি আমাদের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের হামলা চালায়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী এমন প্রতিক্রিয়া দেখাবে, যা এর আগে কেউ কখনো দেখেনি।”


তবে তিনি একই সঙ্গে আশাবাদ ব্যক্ত করেন, “আমরা চাইলে খুব সহজেই ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারি এবং এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ইতি টানতে পারি।”

সূত্র: বিবিসি, সিএনএন