বুধবার, ২৫ জুন, ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশের বড় রদবদল: একযোগে বদলি ৮ পরিদর্শক, আলোচনার কেন্দ্রে পুলিশ প্রশাসন


ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে জহির শাহ্ 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ প্রশাসনে নজিরবিহীন এক রদবদলের হাওয়া লেগেছে। জেলার নয়টি থানার মধ্যে পাঁচ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)-সহ ৮ জন পুলিশ পরিদর্শক-কে একযোগে বদলি করা হয়েছে। পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই পদক্ষেপের ঘোষণা দেওয়া হয়, যা রাতারাতি পুরো জেলার আইন-শৃঙ্খলা জগতে আলোড়ন তুলেছে।

 

বদলিকৃতদের তালিকা ও দায়িত্ব পুনর্বিন্যাস:


ওসি পর্যায়ের রদবদল:

বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি মোর্শেদুল আলম → সরাইল থানায়


নাসিরনগর থানার ওসি মো. খাইরুল আলম → আশুগঞ্জ থানায়


সরাইল থানার ওসি মো. রফিকুল হাসান → ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর কোর্টে পরিদর্শক


আশুগঞ্জ থানার ওসি মো. বিল্লাল হোসেন → সদর কোর্টে পরিদর্শক


নবীনগর থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক → ডিএসবি (District Special Branch) পরিদর্শক

ইন্সপেক্টর পর্যায়ের পদায়ন:

মুহাম্মদ আজহারুল ইসলাম (পুলিশ লাইন) → নাসিরনগর থানার ওসি


মো. হাসান জামিল খান (নাসিরনগর তদন্ত) → বাঞ্ছারামপুর থানার ওসি


মো. শাহীনূর ইসলাম (আখাউড়া তদন্ত) → নবীনগর থানার ওসি


পদক্ষেপের পেছনের গল্প: দক্ষতা, দায়িত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গি

এই রদবদলের মূল ব্যাখ্যা এসেছে পুলিশ সুপার এহতেশামুল হকের কণ্ঠে:


“জনস্বার্থে এবং কর্মকর্তাদের দক্ষতা ও গতিপ্রকৃতি মূল্যায়নের ভিত্তিতে এই রদবদল করা হয়েছে।”


তাঁর এই বক্তব্যে একটি বিষয় স্পষ্ট—এই রদবদল কেবল আনুষ্ঠানিক নয়, এটি একটি দীর্ঘদিনের মূল্যায়নের ফলাফল। জেলা প্রশাসনে কাজের গতি বাড়ানো, থানাগুলোর মধ্যে ভারসাম্য আনা, এবং বিশেষ কিছু জায়গায় অভিযোগের ভিত্তিতে আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা—এই তিনটি মূল দৃষ্টিকোণেই বদলির সিদ্ধান্ত হয়েছে।


সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের প্রতিক্রিয়া:

স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এটিকে পজিটিভ প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস হিসেবে দেখছেন।


অন্যদিকে সাধারণ জনগণও আশাবাদী—নতুন কর্মকর্তারা হয়তো দ্রুত সেবা প্রদান ও অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অধিক সক্ষমতা দেখাবেন।


সততা ও স্বচ্ছতা—পুলিশ বাহিনীর সুনাম অটুট

জেলার প্রতিটি থানায় পুলিশ যে দিনরাত পরিশ্রম করে, অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সদা তৎপর—সেটি এই রদবদলের মধ্যেও বিদ্যমান। এই পদক্ষেপ আরও একবার প্রমাণ করে, পুলিশ বাহিনী এখন আত্মবিশ্বাসী ও প্রস্তুত—আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে সবার আগে থাকবে পুলিশের সাহসী কাঁধ।


সাহসী বদল, স্বচ্ছ অভিযাত্রা

এই প্রতিবেদন শুধু একটি রদবদলের বিবরণ নয়—এটি একটি পরিবর্তনের বার্তা। পুলিশ প্রশাসনের ভেতরে সুশাসনের চর্চা, জনস্বার্থে কর্মক্ষমতার মূল্যায়ন, এবং দক্ষ নেতৃত্বকে পুরস্কৃত করার ইঙ্গিত। আমাদের প্রিয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া আজ নতুন পথে হাঁটছে—জনগণের আশার দিকে, শৃঙ্খলার বাতিঘরে।