Friday, 25 July 2025

১ম শ্রেণির ছাত্রের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ধর্ষণ চেষ্টা মামলা!


আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার আমতলীতে প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া ছাত্রকে প্রধান আসামি করে বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক লায়লাতুল ফেরদৌস মামলাটি আমলে নিয়ে আমতলী থানাকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের জন্য আদেশ প্রদান করেন।


উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের চাউলা গ্রামে সাড়ে ৭ বছরের প্রথম শ্রেণি পড়ুয়া এক শিশু মামলার অন্যতম আসামি। মামলায় শিশু নাঈমকে চরিত্রহীন ও ১৫ বছরের কিশোর দেখিয়ে মামলার আবেদন করে বাদী পক্ষ।


শিশু মো. নাঈম (০৭) চাউলা আবু ইউসুফ নূরাণী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রথম শ্রেণীর ছাত্র। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দেখে বিস্মিত এলাকাবাসী।


জানা যায়, চাউলা গ্রামের একই এলাকা এবং একই মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নাঈম ইসলাম প্রথম শ্রেনী ও তাজমিন আক্তার নার্সারিতে অধ্যায়নরত আছেন। প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন বিকালে খেলাধুলা করার জন্য বাড়ি থেকে নাঈম ইসলাম পাশেই খেলতে যায়। খেলাধুলার এক পর্যায়ে নাঈমের জুতা পুকুরে ছুঁড়ে ফেলে তাজমিন। এনিয়ে তাজমিনকে তাড়া করে নাঈম।


দৌড়াতে পা ফসকে পরে আঘাত পায় তাজমিন। বিষয়টি বাড়িতে জানালে তাজমিন ও নাঈমের মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি, ঝগড়া ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে নাঈমের মাকে শিশু নির্যাতন মামলার ভয় দেখিয়ে চলে যায় তাজমিনের মা।


স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, আমরা শুনেছি কিন্তু ধর্ষণ চেষ্টা করার মতো এমন বিষয় নাও হতে পারে। দুজনেই শিশু।


নাঈম ইসলামের বাবা নুরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, আমি বাড়ি ছিলাম না। এসে শুনতে পাই বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করতে গিয়ে পা পিছলে পরে গিয়ে আঘাত পেয়েছে তা নিয়ে আমার স্ত্রীর সাথে ঝগড়া ও হাতাহাতি হয়েছে। আমি বলেছিলাম চিকিৎসা করানোর জন্য। পরে শুনি আমার পরিবারের সবাইকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামি করা হয়েছে। নাবালক শিশুসহ আমাদের হয়রানি করতে তারা পরিকল্পিত ভাবে আমাদের মামলা দিয়ে হয়রানি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে।


নাঈমের মা রুমা বেগম বলেন, খেলতে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে তা নিয়ে ঝগড়া। পরে জানতে পারি মামলা করছে আমাদের সকলকে আসামি করে।  আহত শিক্ষার্থী তাজমিনের বাবা নাজমুল শিকদার মুঠোফোনে মামলার কথা স্বীকার করে বলেন মেয়েকে নিয়ে পটুয়াখালী হাসপাতালে আছি অন্য সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেছি এই বলে কল কেটে দেন।


চাউলা আবু ইউসুফ নূরাণী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মাওলানা মো. হারুন অর রশিদ বলেন, দুজনেই আমাদের মাদ্রাসার নিয়মিত শিক্ষার্থী। ধর্ষণ চেষ্টার বিষয় জানত চাইলে তিনি জানান ওটা তাদের পারিবারিক বিষয়।


আমতলী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, কোর্টের নির্দেশে মামলা নিয়েছি সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।