Monday, 14 July 2025

লিটনক প্রসঙ্গে বুলবুল, ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট


খেলার ডেস্ক :

‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট’—চেনা কথাটি যেন হঠাৎই বাস্তব হয়ে উঠল ডাম্বুলায়। বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ যেন চলতি বছরে এক বৃত্তের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছিল নাম, প্রতিশ্রুতি, অথচ প্রতিফলন নেই। তবু রবিবার সন্ধ্যায়, ডাম্বুলায় যেন সেই বৃত্তটা একটু ফাটল ধরল। লিটন দাস নামটা নিয়ে বিতর্ক, হতাশা, অতঃপর বিরক্তি—হঠাৎই যেন স্মরণ করিয়ে দিলেন, ‘ক্লাস হারিয়ে যায় না, কেবল সময় নেয় নিজেকে খুঁজে পেতে।’


১৭৭ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। তারপর শরিফুল-রিশাদদের আগুনে বোলিং। ফলাফল? ১৫ ওভার ২ বলেই ৯৪ রানে গুটিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। বাংলাদেশ জিতল ৮৩ রানে। সিরিজ এখন ১-১। সবচেয়ে বড় খবরে ছিলেন লিটন দাস—৪৮ বলের ৭৬ রানের এক ইনিংসে যেন নিজের টুপির ওপর ধুলো ঝাড়লেন। কেবল রান নয়, ছিল ছন্দ, ছিল ছায়া, ছিল সেই পুরোনো লিটন—যার ব্যাটিং দেখে এক সময় ভবিষ্যতের ছায়া দেখেছিলেন অনেকে।


বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, যিনি নিজেও বাংলাদেশের ব্যাটিং ঐতিহ্যের এক অধ্যায়, মনে করিয়ে দিলেন ক্রিকেটের সেই চিরন্তন সত্য, ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট।’


সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তার কণ্ঠে শোনা গেল প্রশংসা, তবে সীমিতভাবে। তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে একক কৃতিত্ব দিতে চাই না। এই জয়ের পেছনে দলীয় পারফরম্যান্সের ভূমিকা বেশি। শামীম-লিটন সবাই ভালো খেলেছে।’


তবু বোঝা গেল—দীর্ঘ দিন পরে দলের শীর্ষ ব্যাটারের ব্যাটে রান ফেরা কেবল পরিসংখ্যানের স্বস্তি নয়, একরকম মানসিক আশ্বাসও। শেষ ম্যাচে কি মিলবে সেই বহুল প্রতীক্ষিত সিরিজ জয়? চলতি বছরে এখনো কোনো ফরম্যাটে সিরিজ জেতেনি বাংলাদেশ। একের পর এক হার, ড্র, আর ব্যাটিং ধস—সবকিছু মিলিয়ে সমর্থকের মনোবল যখন প্রায় শূন্য রেখায়, তখন সামনে এসেছে এক সম্ভাবনা।


বুধবার সিরিজের শেষ ম্যাচ। জিতলে সিরিজ বাংলাদেশের। হারলে আবার সেই পুরোনো ছায়া। বুলবুল অবশ্য ইতিবাচক। টেস্ট সিরিজের খুঁটিনাটি স্মরণ করিয়ে দিয়ে বললেন, ‘জেতা ম্যাচ হেরেছি, ড্র করেছি। কিন্তু উন্নতির জায়গা আছে।’


এই জয় কেবল সংখ্যার ভাষায় স্বস্তি নয়, এক প্রতীকী ঘুরে দাঁড়ানোও। লিটন দাস হয়তো আগামী ম্যাচেই আবার ব্যর্থ হবেন, কিন্তু রবিবারের ইনিংসটা প্রমাণ করল—যারা ক্লাসিকাল, তারা মরে না। তারা শুধু নিজেকে খুঁজে ফেরে সময়ের আয়নায়।