টি-টোয়েন্টিতে এমন প্রত্যাবর্তন কজনের হয়? চার ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করে ৪ উইকেট বাংলাদেশের অফস্পিনার শেখ মেহেদী হাসান আজ কলম্বোতে যেন লিখে ফেললেন এক স্বপ্নের গল্প। সিরিজ নির্ধারণী আজ এই ম্যাচে মাহেদির ঘূর্ণিতে ঘায়েল শ্রীলঙ্কা মাত্র ১২ ওভার শেষে ৭৩ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে দিশেহারা।
শেষ অবদি লংকা ২৯ ওভারে ১৩২ রানে আটকা পড়েছে। দলের পক্ষে এটি মেহেদির সেরা বোলিং ফিগার ৪/১১, তাও এমন এক মঞ্চে যেখানে বাজি পুরো সিরিজের। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার আগুনঝরা স্পেলেই মূলত ম্যাচের রাশ চলে এসেছে বাংলাদেশের হাতে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে একদম শুরুতেই চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে মেহেদীর হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক লিটন দাস সেই এক সিদ্ধান্তেই ঘুরে যায় ম্যাচের রূপ।
নিজের প্রথম ওভারে মেহেদি তুলে নেন ভয়ঙ্কর ব্যাটার কুশল পেরেরার উইকেট, দ্বিতীয় ওভারে ফেরান দীনেশ চান্দিমালকে, এরপর একে একে ফেরান চরিথ আসালঙ্কা ও সেট ব্যাটার পাথুম নিশাঙ্কাকে। নিশাঙ্কা ছিলেন শ্রীলঙ্কার একমাত্র ব্যাটার যিনি কিছুটা লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন। ৩৯ বলে ৪৬ রানের ইনিংস খেলে তিনিই একপ্রকার একাই লড়ছিলেন। কিন্তু মেহেদীর তৃতীয় উইকেট হিসেবে তাকেও ফেরানোয় শ্রীলঙ্কা পড়ে চূড়ান্ত বিপাকে। ইনিংসের মাঝপথে স্টাম্প মাইকে শোনা যায় লিটনের কণ্ঠ ঘোরাও মেহেদী, প্রথম বলেই ঘোরাও আসালাঙ্কাকে। কাপ্তানের সেই নির্দেশনায় সাড়া দিয়ে বলটা ঘোরাতে গিয়ে মেহেদী সরাসরি উড়িয়ে দেন আসালাঙ্কার অফ স্টাম্প! ম্যাচ পরিস্থিতি, উইকেটের ব্যবহার, এবং পরিকল্পনার নিখুঁত বাস্তবায়ন মেহেদীর এই স্পেল শুধু পরিসংখ্যান নয়, ছিল ট্যাকটিক্স ও নিয়ন্ত্রণের অনন্য প্রদর্শনী।
সিরিজ এখন ১-১ তে সমতায়। শেষ ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই মেহেদী হাসান এমন স্পেল করে দিয়েছেন, যা ম্যাচটিকে নিয়ে গেছে বাংলাদেশের দিকেই। এখন শুধু বাকিদের কাজ সেই ছন্দ ধরে রাখা। ৬ষ্ঠ উইকেটে ১২ আর ৭ম উইকেট জুটির ১৫ রানের জুটি লংকা বেশি দুর যেতে দেয় নি। বাংলাদেশের বোলিং আর ফিল্ডিং ছিল বিশ্ব মানের। যে কারনে স্বাভাবিক দলের ব্যাটাররা সুবিধা করতে পারেনি।