দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। শতভাগ নকলমুক্ত শিক্ষার মহাযজ্ঞে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অপ্রতিরোধ্য দীপ্তি - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

Friday, 11 July 2025

শতভাগ নকলমুক্ত শিক্ষার মহাযজ্ঞে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অপ্রতিরোধ্য দীপ্তি


জহির শাহ্ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

কুমিল্লা বোর্ডে চাঁদপুরের পশ্চাৎপদতায় সমতার দার্শনিক সংকেত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষার প্রান্তরে, যেখানে জ্ঞানের অমর দীপশিখা অটুট সংকল্পে প্রজ্বলিত, ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল এক মহাকাব্যিক বিজয়গাথা হয়ে উঠেছে। কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের ছয় জেলার মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শ্রেষ্ঠত্বের স্বর্ণমুকুট পরে, যেন মেধার তরবারি দিয়ে অজ্ঞতার গভীর অন্ধকারকে বিদীর্ণ করেছে। 


অন্যদিকে, চাঁদপুর, শিক্ষার এই মহাযজ্ঞে পশ্চাৎপদতার ছায়ায় ক্লান্ত, তালিকার নিচে দাঁড়িয়ে শিক্ষার সমতা ও সুযোগের জন্য এক দার্শনিক আহ্বান জানাচ্ছে, যা সমাজের প্রতিটি স্তরে ন্যায়ভিত্তিক শিক্ষার পুনর্জাগরণের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। ১০ জুলাই ২০২�৫, বৃহস্পতিবার দুপুরে, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলামের কণ্ঠে ফলাফলের ঘোষণা যেন এক নতুন যুগের সূচনা, যেখানে স্বচ্ছতা, ন্যায় ও মেধার জয় প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি বলেন, “শতভাগ নকলমুক্ত পরীক্ষা আমাদের গর্ব, শিক্ষার গায়ে ছায়া নয়, জ্যোতির স্পর্শ লেগেছে। পিছিয়ে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে সামনে আনতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।” পরিসংখ্যানের আলোয় উদ্ভাসিত এই চিত্রে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৬৯.২৪ শতাংশ পাসের হার নিয়ে শীর্ষে, যেখানে ২৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ২৩,৪৭১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬,২৫১ জন বিজয়ী হয়েছেন, এবং ১,৪৭৫ জন জিপিএ-৫ অর্জন করে শিক্ষার আকাশে নক্ষত্রের মতো উজ্জ্বল।


এই অর্জন শুধু সংখ্যার জয় নয়, বরং শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার এক দীপ্ত প্রতিফলন, যা সমাজের জ্ঞানভিত্তিক অগ্রগতির প্রতীক। ফেনী, ৬৬.৬৯ শতাংশ পাসের হার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে, যেখানে ১৮৬টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৬,৪৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০,৯৬৫ জন উত্তীর্ণ, এবং ১,১২৫ জন জিপিএ-৫ পেয়ে মেধার আলো ছড়িয়েছে। লক্ষ্মীপুর তৃতীয় স্থানে, ৬৫.৯৬ শতাংশ পাসের হার নিয়ে, যেখানে ১৭৮টি প্রতিষ্ঠান থেকে ১৫,৭৬৩ জনের মধ্যে ১০,৩৯৮ জন উত্তীর্ণ, এবং ৮৫৮ জন জিপিএ-৫ অর্জন করে শিক্ষার পথে নিজেদের অবদান রেখেছে। কুমিল্লা জেলা নিজেই চতুর্থ স্থানে, ৬৫.০৭ শতাংশ পাসের হার নিয়ে, যেখানে ৬০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫৭,৩৩১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৭,৩০৮ জন উত্তীর্ণ, এবং ৪,২৮৫ জন জিপিএ-৫ অর্জন করে বোর্ডের মধ্যে সর্বাধিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক হয়েছে। নোয়াখালী পঞ্চম স্থানে, ৫৯.৭৫ শতাংশ পাসের হার নিয়ে, যেখানে ৩০২টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২৯,৯১৬ জনের মধ্যে ১৭,৮৭৬ জন উত্তীর্ণ, এবং ১,০৯৪ জন জিপিএ-৫ পেয়ে শিক্ষার আলোর পথে এগিয়েছে। কিন্তু চাঁদপুর, মাত্র ৫৫.৯২ শতাংশ পাসের হার নিয়ে তালিকার নিচে, যেন শিক্ষার এই মহাযজ্ঞে ক্লান্ত যোদ্ধা। 


এই জেলার ২৮৫টি প্রতিষ্ঠান থেকে ২৪,৬৪৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ১৩,৭৮৩ জন উত্তীর্ণ, এবং ১,০৬৫ জন জিপিএ-৫ অর্জন করেছে, যা শিক্ষার সমান সুযোগ, কৌশলগত পরিকল্পনা ও প্রশাসনিক সমন্বয়ের অভাবের এক নীরব সাক্ষ্য। এই পার্থক্য শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের অগ্রগতি ও পশ্চাৎপদতার এক দার্শনিক বিশ্লেষণ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রেষ্ঠত্ব যেন জ্ঞানের বিজয়, শিক্ষক-অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত সংকল্পের এক অমর গাথা, যা সমাজের প্রতিটি স্তরে মেধার আলো ছড়ায়। চাঁদপুরের পশ্চাৎপদতা, তবে, এক নীরব আহ্বান, যা শিক্ষার সমতা, প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুযোগের প্রসার, এবং নীতিগত সংস্কারের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরে। কুমিল্লা বোর্ডের গড় পাসের হার ৬৩.৬০ শতাংশ হলেও, এই ফলাফল একটি মহাকাব্যিক যাত্রার প্রতীক, যেখানে শিক্ষা সমাজের ভিত্তি, মেধা জাতির শক্তি, এবং সমতা ভবিষ্যতের প্রতিশ্রুতি। চেয়ারম্যানের কথায় এই যাত্রার দৃঢ়তা: “শিক্ষার আলো শুধু শহরের মঞ্চে নয়, প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রতিটি শিক্ষার্থীর দরজায় পৌঁছাতে হবে।” এই ফলাফল শুধু শিক্ষার্থীদের বিজয় নয়, বরং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের এক অমর প্রতিজ্ঞা, যা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শ্রেষ্ঠত্বে উদ্ভাসিত এবং চাঁদপুরের চ্যালেঞ্জে নতুন দিগন্তের স্বপ্ন বুনে।