গত বছরের জুলাই-আগস্টে কোটা আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনা সরকারের পতনের দাবিতে ‘সর্বপ্রথম’ এক দফা ঘোষণা করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগে ছাত্র সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ তথ্য জানান ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ১৬ জুলাই রংপুরে আবু সাঈদ এবং চট্টগ্রামে ওয়াসিম আকরামকে হত্যা করা হয়েছিল। সেই রাতেই আমাদের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমান সর্বপ্রথম এক দফা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেছিলেন, কোটা আন্দোলন দিয়ে এই সরকারের পতন হবে না। তিনি শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে এক দফা ঘোষণা করেন। এটা নিয়ে আমরা কোনো ক্রেডিট নিতে চাই না। যদি কেউ ইতিহাস বিকৃতি করে, ছাত্রদল মেনে নেবে না।
এসময় তিনি বলেন, ৩ জুলাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তারেক রহমান কোটা আন্দোলনের পক্ষে থাকার জন্য ছাত্রদলকে স্পষ্ট নির্দেশনা দেন। ৭ জুলাই শাহবাগে ‘বাংলা ব্লকেড’ পালন কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল অগ্রভাগে ছিল।
১১ জুলাই নয়াপল্টনে সংবাদ সম্মেলন করে কোটা আন্দোলনে ছাত্রদলের অংশগ্রহণের বিষয়ে ষ্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা ছাত্রদের নিয়ে কটূক্তি করেছিল, তার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বোনেরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। সেদিন রাত পর্যন্ত ছাত্রদল রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান করেছিল।
১৫ জুলাই কটূক্তির প্রতিবাদে ছাত্রদল সারা বাংলাদেশে কর্মসূচি পালন করে। সেদিন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদলের ওপর হামলা চালিয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী বোনদের ওপর যেভাবে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছিল সেটি আজও ইতিহাসে রয়েছে।
ছাত্রদল সভাপতি বলেন, ১৭ জুলাই কমপ্লিট শাটডাউন, ১৮, ২০ জুলাই, ৩ আগস্ট, ৮ আগস্ট ছাত্রদল আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে। এভাবেই গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে। খন্ডচিত্র, মনগড়া তথ্য দিয়ে ষড়যন্ত্র করে ইতিহাস গড়ার চেষ্টা করা হলে তারা আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবেন।
ছাত্রসংসদ নির্বাচ প্রসঙ্গে রাকিব বলেন, ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অবশ্যই ছাত্রদল অংশগ্রহণ করবে। তার পূর্বে আমাদের প্রধান দাবি ছিল ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের তালিো প্রকাশ করতে হবে। তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এক বছর অতিবাহিত হলেও তা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে বারবার দাবি জানিয়েছি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করেছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ন্যূনতম আগ্রহ দেখায়নি। এখনও নীল দলের শিক্ষকরা বিশ্ব বিদ্যালয়ে রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা বলে দিতে চাই, ছাত্রলীগকে পুনর্বাসনের দুঃসাহস যদি কেউ দেখায়, ছাত্রদল তাদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলবে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে, তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
বক্তব্যের শুরুতেই রাকিব বিগত দিনের যারা গুম হয়েছেন তাদের সন্ধান দাবি করেন। জুলাই আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। এছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দাবি জানান, গুম হওয়া ব্যক্তিদের সন্ধ্যানের উদ্যোগ নিতে এবং গুমের সঙ্গে
জড়িতদের বিচারের আওতায় আওতায় আনতে।এসময় তিনি চব্বিশের ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার প্রত্যাশা পূরণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৯ দফা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন।