খেলা ডেস্ক :
যুক্তরাষ্ট্রে চলছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় আসর। ৩২ দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হওয়া এবারের আসরের পর্দা নামবে আগামীকাল। ফাইনালে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে গেল সপ্তাহে নিজেদের ১২১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে অফিস খুলেছে বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। তাও সেটা দেশটির নিউ ইয়র্কের ট্রাম্প টাওয়ারে।
ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানিয়েছেন, ২০২৬ বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রে অফিস খুলেছেন তারা। ফুটবল যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের প্রিয় খেলাগুলোর তালিকায় শীর্ষস্থানে নেই। চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের দর্শক খরা যার উদাহরণ। দেশটিতে ফুটবলের চেয়ে জনপ্রিয় খেলা বেসবল ও বাস্কেটবল।
২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে বাকি এখনো ১১ মাস। ৪৮ দেশ নিয়ে খেলা, এত বড় আসর আয়োজনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কতটা প্রস্তুত, সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে অনেকে। তবে ট্রাম্প নিজে বিশ্বাস করেন, ২০২৬ বিশ্বকাপ হবে ইতিহাসের সবচেয়ে বড়, নিরাপদ আসর। ২০২৬ বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হিসেবে রয়েছে কানাডা ও মেক্সিকো। দেশ দুটির সঙ্গে বাণিজ্যিক অস্থিরতা কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্রের। যার প্রধান কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করা একাধিক দেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যার মধ্যে অন্যতম ইরান।
এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৮ সালে অনুষ্ঠিত হবে বড় ইভেন্ট অলিম্পিক গেমস। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থাকায় আসরটিতে সব দেশের ক্রীড়াবিদ অংশ নিতে পারবে কি না, সেটা নিয়েও রয়েছে শঙ্কা। প্রথমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ২০২৬ বিশ্বকাপ আয়োজন নিশ্চিত করেন। দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে হোয়াইট হাউজের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে খেলার দুনিয়ায় নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছেন তিনি। যদিও ট্রাম্পের আগে ৪৪ জন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করছেন হোয়াইট হাউজের।
তবে ট্রাম্পের মতো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট খেলার দুনিয়া নিয়ে এতটা আগ্রহ দেখায়নি, যতটা দেখাচ্ছেন ট্রাম্প। যদিও তার এমন আগ্রহ অনেকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। তবে ঠিক কী উদ্দেশ্যে হঠাৎ ক্রীড়াজগতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তা নিয়েও সমালোচকদের মন্তব্য থাকছে হরহামেশা। রাজনীতি, অর্থনীতির মতো খেলার দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে অনন্য উচ্চতায় নেওয়া, নাকি এর পেছনে রয়েছে ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য।
এই নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান। প্রতিবেদনটিতে দাবি করা হয়েছে, শুধু খেলার দুনিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তা বাড়াতে নয়, বরং শান্তিতে নোবেল জেতার জন্য এমন উদ্যোগ নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে জনপ্রিয় মার্কিন কলামিস্ট অ্যান কুল্টার যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের জনপ্রিয়তাকে জাতির নৈতিক অবক্ষয়ের লক্ষণ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের জনপ্রিয়তা অনন্য উচ্চতায় নেওয়ার পাশাপাশি নিজের উদ্দেশ্যে সফল হতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।