আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ও ত্রাণবাহী গাড়ি বহরের আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৬১৩ জন ফিলিস্তিনির প্রাণ গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। আজ শুক্রবার (৪ জুলাই) বিশ্বসংস্থাটি জানায়, মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে জুন মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়ে নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ৫০৯ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনপুষ্ট গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে। খবর এএফপির।
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে সবধরনের সাহায্যপণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়ার পর, দুর্ভিক্ষের শঙ্কার মধ্যে মে মাসের ২৬ তারিখে জিএইচএফ সাহায্যপণ্য বিতরণ করতে শুরু করে।তবে জিএইচএফের কার্যক্রম ছিল বিশৃঙ্খলাপূর্ণ এবং প্রায় প্রতিদিনই ফিলিস্তিনি এলাকাগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী রেশন নিতে আসা নিরীহ লোকজনের ওপর গুলিবর্ষণ করতো।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের মুখপাত্র রাভিনা শামদাসানি শুক্রবার এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেন, জুন মাসের ২৭ তারিখ বিকেল পর্যন্ত জিএইচএফের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ও তাদের গাড়ি বহরের আশপাশে ৬১৩ জনকে হত্যার খবর রেকর্ড করা হয়েছে। এসব ঘটনার মধ্যে ৫০৯ জনের মৃত্যু হয়েছে জিএইচএফের বিতরণ কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায়। বাকীরা মারা গেছে জাতিসংঘের ত্রাণ বহরের আশপাশে।
শামদাসানি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস হত্যাকাণ্ডের আরও প্রতিবেদন পেয়েছে যা নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করছি। তাই এই সংখ্যা ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে। তবে ৬১৩ জনের এই সংখ্যাটি নিশ্চিত করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান, গাজা উপত্যকায় প্রবেশাধিকার কঠিন হওয়ায় এই কাজ দুরূহ হয়ে পড়েছে।
শামদাসানি বলেন, ‘সেখানে আসলে কী ঘটেছিল সেই ঘটনার পুরো চিত্র তুলে ধরা হয়তো সম্ভব হবে না, তবে এটা পরিষ্কার যে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গোলাবর্ষণ করেছিল এমনকি সাহায্যপণ্য বিতরণ কেন্দ্রগুলোতে ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল।’
শামদাসানি আরও বলেন, ‘কতজনকে হত্যা করা হয়েছিল? এর জন্য দায়ী কে? এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত করতে হবে। আর সেজন্য গাজায় প্রবেশের অনুমোদন দরকার। এসব হত্যাকাণ্ডের দায় কাউকে নিতে হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের দেলাওয়ারে ভিত্তিক জিএইচএফ গতকাল বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, সংগঠনটি গাজায় ১০ লাখেরও বেশি খাদ্যপণ্যের বাক্স বিতরণ করেছে। জিএইচএফের চেয়ারম্যান জনি মুর হলেন একজন খ্রিস্টান ধর্মপ্রচারক নেতা যার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ সখ্যতা রয়েছে।