জহির শাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নাহিদ হোসেন রাসেল (৩০), একজন প্রতিশ্রুতিশীল ব্যাংক কর্মকর্তা, প্রাণ হারিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সদর উপজেলার বিয়াল্লিশহর এলাকায় মল্লিকা সিএনজি পাম্পের সামনে। এই দুর্ঘটনায় রাসেলের সঙ্গে থাকা তার সহযাত্রী তপু (২৮) গুরুতর আহত হয়েছেন।
নিহত নাহিদ হোসেন রাসেল আশুগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের আশুগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মোতালিবের পুত্র। তিনি ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ব্রাহ্মণবাড়িয়া শাখায় কর্মরত ছিলেন এবং তার পেশাগত দক্ষতা ও নিষ্ঠার জন্য সহকর্মীদের মাঝে প্রিয় ছিলেন। এছাড়া, রাসেল রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এবং আশুগঞ্জ সার কারখানা হাউসিং ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন জানান, মঙ্গলবার রাতে নাহিদ হোসেন রাসেল মোটরসাইকেলে করে কাউতলী থেকে সুলতানপুরের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মল্লিকা সিএনজি পাম্পের কাছে তিনি তার মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারান এবং সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এই ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই রাসেলের মৃত্যু হয়। তার সঙ্গে থাকা সহযাত্রী তপু আহত অবস্থায় স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত রাসেলের বন্ধু এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি কাজী আসফাক শফিক আনান জানান, দুর্ঘটনার সময় রাসেল মোটরসাইকেলে তেল ভর্তি করে মহাসড়কে উঠছিলেন। এ সময় একটি দ্রুতগামী ট্রাক তাকে চাপা দেয়, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলেও পথেই তার মৃত্যু হয়। আনান আরও জানান, রাসেল ছিলেন একজন সৎ, নিষ্ঠাবান এবং সমাজসেবায় নিবেদিত ব্যক্তি, যার মৃত্যু এলাকার জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের মরদেহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুতি চলছে। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং ট্রাকটি জব্দ করার চেষ্টা চলছে। তবে, ট্রাকচালক ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।
নাহিদ হোসেন রাসেলের মৃত্যুতে তার পরিবার, সহকর্মী এবং স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে গভীর শোক বিরাজ করছে। তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে স্থানীয়রা তার বাড়িতে ভিড় করছেন। এই দুর্ঘটনা আবারও সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠেছে।