রাজবাড়ীতে প্রতিবন্ধী এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর ১৫ হাজার টাকায় মীমাংসার ঘটনায় অভিযুক্ত দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২২ মে) রাত ২টার দিকে সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে রাত সোয়া ১২টার দিকে লিটন শেখ ও হক মোল্লাকে আসামি করে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা।
গ্রেফতার লিটন শেখ (৩০) বসন্তপুর ইউনিয়নের বড় রঘুনাথপুর গ্রামের ছলেমান শেখের ছেলে ও হক মোল্লা (৫০) একই গ্রামের মৃত আফছার উদ্দিন মোল্লার ছেলে।
গত রোববার (২১ মে) দুপুরে সময় সংবাদে ‘প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণ, ১৫ হাজারে মীমাংসা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।
সংবাদটি রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামানের দৃষ্টিগোচর হলে তিনি রাজবাড়ী সদর থানার ওসিকে ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের পর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কামরুজ্জামান শিকদার ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এসআই কামরুজ্জামান শিকদার জানান, পুলিশ সুপারের নির্দেশে সোমবার (২২ মে) দুপুরে ভুক্তভোগী কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়। সেখানে নারী পুলিশ সদস্য দিয়ে কিশোরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার বর্ণনায় ধর্ষণের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে দুজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার পর বড় রঘুনাথপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে রাত ২টার দিকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এসআই কামরুজ্জামান শিকদার আরও জানান, রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভুক্তভোগী কিশোরীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। সে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। গ্রেফতার দুই আসামিকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই রাজবাড়ী সদরের নানাবাড়িতে থাকে ১৪ বছরের শারীরিক প্রতিবন্ধী ওই কিশোরী। তাদের প্রতিবেশী ছলেমান শেখের ছেলে লিটন শেখ নিজ বাড়ির ওপরে মুদি দোকান করেন। গত পহেলা মে দুপুর ১২টার দিকে লিটনের দোকানে কোমল পানীয় আনতে যায় ওই কিশোরী। একা পেয়ে লিটন তাকে হাত ধরে টেনে দোকানের পেছনে নিজ ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করেন।
কিশোরী বাড়ি গিয়ে ঘটনাটি তার নানিকে জানায়। তার নানি ঘটনাটি গ্রামের মাতবর রহমান খাঁ ও হক মোল্লাকে জানান। রহমান খাঁ বিষয়টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানকে জানানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু হক মোল্লা বিষয়টি নিজে মীমাংসা করে দেবেন বলে জানান। পরে হক মোল্লা লিটনের কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা নিয়ে ভুক্তভোগীর পরিবারকে দিয়ে ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দেন।
