কারামুক্ত হলেও নিজের ফোন ব্যবহার করতে পারছেন না বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বেশ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা। কারণ গ্রেফতারের সময়ে সাদা পোষাকের পুলিশ মোবাইল নিয়ে যাওয়ার কারণে কারামুক্ত হয়ে আর সে ফোন কেউ আনতে যায়নি। এখন পর্যন্ত নিজে ফোনও নেননি।
বিএনপি মহাসচিবের ঘনিষ্ঠরা বলেন, ‘গত বছরের ২৯ অক্টোবর সাদা পোষাকের পুলিশ (ডিবি) বিএনপি মহাসচিবকে তার গুলশানের বাসভবন থেকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর প্রায় ৯ ঘণ্টা তাকে মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়। এ সময় মির্জা ফখরুলকে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার ফোনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়। স্ক্যান করা হয়। এ কারণে সে ফোন ও নাম্বার ব্যবহার করা ঝুকিপূর্ণ মনে করছেন মির্জা ফখরুল।’
হোয়াটসঅ্যাপে মির্জা ফখরুলের নম্বরে দেখা গেছে সর্বশেষ ২৯ অক্টোবর ২০২৩ তিনি এ্যাকটিভ ছিলেন। এরপর আর তাকে তার মোবাইল নাম্বারে দেখা যায়নি। অন্য সময় কারামুক্ত হলে তাকে ফোনে পাওয়া গেলেও এবার তাকে পাওয়া যায়নি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান দুরন্ত বিডিকে বলেন, ‘মহাসচিব স্যারের শরীর ভালো নেই। উনি নতুন ফোন নেননি। সুস্থ হয়ে পরে ফোন ব্যবহার করবেন।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কারাগার থেকে মুক্তি পান। মির্জা ফখরুল গ্রেফতারের ১০৯ দিন এবং আমির খসরু মাহমুদ ১০৫ দিন পর কারামুক্ত হন।
এর আগে ২ নভেম্বর দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের এক বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকেও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। আমীর খসরুর ছেলে ইস্রাফিল খসরু বলেন, ‘বাবাকে যেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিলো সেখানে ফোন ছিলো না। তবে আমার মায়ের ফোন নিয়ে গিয়েছিলো যারা গ্রেফতার করতে এসেছিলো। কয়েকঘন্টা পরে আবার ফোন রেখে গিয়েছিলো।’
গ্রেফতারের আগে বনানীতে আমির খসরুর দুই ফ্ল্যাটে পুলিশ তল্লাশী চালায়। খসরুর ছেলে আরও বলেন, ‘পুলিশ বাসার প্রতিটি রুম খুঁজে দেখেন। বাবার পাসপোর্ট ও মায়ের মোবাইল ফোন নিয়ে যান। প্রায় ৪০-৫০ মিনিট পর আবার ফেরত দেন।'
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স দুরন্ত বিডিকে বলেন, ‘আমাকে গ্রেফতার করেছিলো পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। তারা আমার ফোন নিয়ে গিয়েছিলো। এরপর তারা আমাকে পল্টন থানায় হস্তান্তর করে। সেখান থেকে সাদা পোষাকের পুলিশ আমাকে রিমান্ডে নিতে চেয়েছিলো। কিন্তু পরে আর নেয়নি। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর আমি পল্টন থানায় যোগাযোগ করেছি কিন্তু তাদের কাছে ফোন নেই বলে জানিয়েছে। আর কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের যারা গ্রেফতারের সময় ছিলো তারা আমার বোনকে যোগাযোগের জন্য কোনো নাম্বার দেয়নি। নাম্বার না থাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। তাই নতুন ফোন কিনেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার মতোই অন্যদের ক্ষেত্রে একই সমস্যা হওয়ায় কেউ কেউ ফোনের আশা ছেড়ে দিয়েছেন। এবার ফোন নিয়ে পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ক্লোন করেছেন অথবা স্ক্যান করে ফোনের যাবতীয় তথ্য নিয়ে গেছেন।’