Wednesday, 30 October 2024

চট্টগ্রাম টেষ্ট - - ব্যাকফুটে বাংলাদেশ, ৫৩৭ রান যেন হাজার মাইল দূরের পথ


জহির ভূইয়া

চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী বিভাগীয় স্টেডিয়াম থেকে

ব্যাটিং উইকেটে পেলে দক্ষিণ আফ্রিকা কি করতে পারে সেটা তারা আগের দিন সাগরিকার পাড়ে ২২ গজি উইকেটে নমুনা দিয়েছে, ৩০৭/২। এরপর আজ পুরোটা দিনই বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে বাটিং অনুশীলন চালিয়েছে। চট্টগ্রাম টেষ্টের দ্বিতীয় দিনে টাইগার বোলারদের মধ্যে সফল সেই একই ব্যক্তি তাইজুল ইসলাম। আজ চট্টগ্রাম টেষ্টের দ্বিতীয় দিন  শেষে অতিথি দলের স্কোর ৫৭৫/৬, তাতে তাইজুলের পকেটেই জমা পড়েছে ৫ উইকেটে। প্রথম দিনের ২ উইকেটও তাইজুলই শিকার করেছিলেন। ৫৭৫/৬ ইনিংস ঘোষণা করে অতিথি দল, বাংলাদেশ জমা দিতে নেমে আজ স্ট্যাম্প তুলে ফেলার আগ অবদি জমা করেছে ৩৮/৪। 


৫৭৬ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের দুই ব্যাটার ২১ রানে দ্রুতই ফেরত গেলেন। আর ২৯ রানের মাথায় ৩য় উইকেট পতনের পর অন্ধকার নেমে আসে টাইগার শিবিরে। দিন শেষে স্বাগতিক বাংলাদেশের নামের পাশে ৩৮/৪। ৫৩৭ রান এখন বাংলাদেশের জন্য হাজার মাইল দূরের পথ।


১ম দিন ৩০৭/২ স্কোরে ওপেনার টনি ছিলেন ১৪১ রানে ডেভিড ছিলেন ১৮ রানে অপরাজিত। এই তৃতীয় জুটি আজ চট্টগ্রামে ২৭০ থেকে ৩৮৬ অবদি দলের স্কোর টেনে নেয়। এই জুটিতে ডেডিভ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার পথে ৫৯ রান করার পর তাইজুল ডেভিডকে বোল্ড করলেন। এরপর আবারো সেই তাইজুল, টনি অল্পের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম টেষ্ট ডাবল সেঞ্চুরি মিস করলেন। ১৭৭ রানের মাথায় তাইজুলের এলবি’র ফাঁদে কাটা গেলেন টনি। 



এরপর ৫ম জুটিতে ভিরয়ানি আর রাইয়ান জুটিও বেশি সময় টিকল না, স্পিনার তাইজুলের জাদুতে শূন্য রানে এলবির ফাঁদে পড়ে সাঁজঘরে ফেরত যান। এরপর বোলার নাহিদ রানা রাইয়ানকে ১২ রান করার পর ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন। ৬ উউকেটে ৪২৩ রানের স্কোরের পর আর সফলতা দেখেনি বাংলাদেশ। ৭ম উইকেটে ব্যাট হাতে ভেল্কি দেখালেন মুলদার ও সিনুরান জুটি। টনি আর স্ট্রিসনানের মতো মুলদারও ক্যারিয়ারে প্রথম টেষ্ট সেঞ্চুরির স্বাদ নিলেন। ১২৩ রানের এই জুটিতে সিনুরানের নামের পাশে ছিল ৭০ রান। ৫৭৫ রানে ৬ উইকেট , দেড় দিন ব্যাট করে ৩ সেঞ্চুরি আর ২ ফিফটি দিয়ে এই স্কোর জমা করে অতিথি দক্ষিণ আফ্রিকান দল।


১ম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৫৭৬ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমেই উইকেট বিলিয়ে দিলেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। আরেক ওপেনার জয় এরপর টিকে থাকতে সঙ্গে পেলেন জাকির হাসানকে। দলের ২১ রানের মাথায় ব্যাক্তি ২ রান করে জাকির রাবদার বলে ক্যাচ দিয়ে দলের বিপদ আরো বাড়িয়ে দিলেন। জয়ের নতুন সঙ্গী অভিজ্ঞ মমিনুল হক।


২১ রানে ২ উইকেট পতনের ফলে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। তৃতীয় জুটিতে জয় আর মমিনুল টিকে থাকতে চেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে গেল। একই উইকেটে বল হাতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের কাঁপিয়ে দিলেন পিটারসন। দলের ২৯ রানের মাথায় পিটারসনের আউটসুইং ডেলিভারি জয়ের ব্যাটের কানায় লেগে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ! ৩ উইকেট পতনের পর ৫৭৬ রান যেন বাংলাদেশের জন্য হাজার মাইল দূরের পথ মনে হচ্ছিল।


জয়ের আউটে পর মুশফিক ক্রিজে আসবেন এটাই ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু তা না হয়ে শেষ বিকেলে কোন ঝুঁকি না নিয়ে বাংলাদেশ বোলার হাসান মাহমুদকে ক্রিজে পাটায় মমিনুলকে সঙ্গ দিতে। কিন্তু হতাশা তো শেষ হয়নি, ৩ রান যোগ করে বাংলাদেশের দলীয়  স্কোর ৩২ রানের মাথায় হাসান বোল্ড হয়ে ফিরে এলেন। স্ট্যাম্প তুলে ফেলার সময় মমিনুল (৬) আর অধিনায়ক শান্ত (৪) দুই অপরাজিত ব্যাটার।