দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। বাংলাদেশে পুশইন প্রসঙ্গে ক্ষোভ ঝাড়লেন মমতা - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫

বাংলাদেশে পুশইন প্রসঙ্গে ক্ষোভ ঝাড়লেন মমতা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলা ভাষাভাষীদের প্রতি বৈষম্য ও হয়রানির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ ঝাড়লেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার দাবি, বাংলা ভাষায় কথা বললেই অনেককে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং ‘পুশইন’ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।


মঙ্গলবার (২৪ জুন) পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে এই অভিযোগ তোলেন তিনি। একই সঙ্গে চলমান ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে গভীর উদ্বেগও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।


বাংলায় কথা বললেই বাংলাদেশি? বিধানসভায় মমতা প্রশ্ন তোলে বলেন, বাংলা ভাষায় কথা বলা কি অপরাধ? বাংলাদেশে মানুষ বাংলা বলে, ঠিকই। কিন্তু সেটা তো আলাদা দেশ। ভারতীয় পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও আমাদের রাজ্যের শ্রমিকদের বাংলাদেশি বলে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।


তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রায় দেড় কোটি শ্রমিক ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেন। কিন্তু এখন বাংলা ভাষার কারণে তাদের পরিচয় নিয়েই সন্দেহ তৈরি করা হচ্ছে।


মমতা বলেন, আজকেও খবর পেয়েছি- রাজস্থানে পশ্চিমবঙ্গের ৩০০ শ্রমিককে বাংলাদেশি বলে আটক করা হয়েছে। শুধু রাজস্থান নয়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা অনেককে উদ্ধার করেছি।


বাংলাদেশে ‘পুশইন’ প্রসঙ্গে মমতা আরও বলেন, আমার রাজ্যের অনেক বাসিন্দাকে বাংলাদেশি বলে বন্দি রাখা হচ্ছে এবং সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। অথচ তারা পশ্চিমবঙ্গের নাগরিক।


তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, বাংলা ভাষায় যারা কথা বলেন, তারা কী দোষ করেছেন? স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু- তারা তো বাংলাতেই কথা বলতেন। আজ বাংলাকে দেখলেই যদি অত্যাচার করা হয়, তাহলে স্পষ্ট করে বলে দিক- বাংলা ভাষা নিষিদ্ধ।


সোমবার (২৩ জুন) নবান্নে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম রিয়াজ হামিদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, আমি কখনো বেআইনি কিছু করি না। উনি আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়েই।


এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি যেন পরোক্ষভাবে বার্তা দিলেন- বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ হলেও তা ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতির বাইরে কিছু নয়।


সেই সঙ্গে বিশ্ব পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন মমতা। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ চলছে। এর ফলে জল, বাতাস ও আবহাওয়া দূষিত হচ্ছে। এখনই পদক্ষেপ না নিলে তা ভয়াবহ হয়ে উঠবে।


তবে তিনি পরিষ্কার করে বলেন, বৈদেশিক ও কূটনৈতিক বিষয়ে মত দেওয়ার অধিকার আমার নেই। আমি শুধু একজন বিশ্বনাগরিক হিসেবে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করছি।


মমতা আরও বলেন, ভারতই প্রথম দেশ যারা প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)-কে স্বীকৃতি দেয়। ইয়াসির আরাফাত এসেছিলেন আমাদের দেশে। রাজীব গান্ধী আমাকে অ্যাঙ্গোলায় পাঠিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক সাহায্যের জন্য।


এই মন্তব্যের মধ্য দিয়ে তিনি ভারতীয় কূটনীতির ঐতিহাসিক অসাম্প্রদায়িক অবস্থান এবং মানবিক ভূমিকার দিকটি তুলে ধরার চেষ্টা করেন।