ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গ্রুপের আদানি পাওয়ার (ঝাড়খণ্ড) লিমিটেডের ফাঁকি দেওয়া ৩৯ কোটি ৭৩ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ৪ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকার শুল্ক ও কর নিয়ে বিপাকে পড়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
আদানি পাওয়ার থেকে আমদানি করা বিদ্যুতে ওই রাজস্ব আদায় না হওয়ায় বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) বিরুদ্ধেই শুল্ক-কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। যা ইতোমধ্যে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
ফাঁকি দেওয়া ওই শুল্ক-কর আদায়ে একের পর এক কারণ দর্শানোর নোটিশ ও তাগিদপত্র দেওয়ার পরও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সর্বশেষ গত ২৮ জুন চাঁপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর স্থল স্টেশন থেকে সময়সীমা বেঁধে দিয়ে তাগিদপত্র দেওয়া হয়। তবে বিপিডিবি থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে এ বিষয়ে সরকার কি সিদ্ধান্ত নেয় এখনো তার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। যার ফলে আদতে ওই রাজস্ব আদায় হবে কি না তা নিয়েই সংশয় রয়ে গেছে।
আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট থেকে ফের সরবরাহ শুরু। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ এমন বিষয়ে গাফলতি কিংবা অনিয়মের সঙ্গে জড়িতের শনাক্তে এনবিআরের কাস্টমস বিভাগের পাশাপাশি মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাবেক মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস (চুক্তির সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সচিব ছিলেন) ও তার নেতৃত্বাধীন অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এনবিআরকে পাশ কাটিয়ে আদানির সঙ্গে চুক্তি করার অনিয়ম খতিয়ে দেখছে দুদকের অনুসন্ধানী টিম। সংস্থাটির উপপরিচালক রেজাউল করিমের নেতৃত্বে একটি টিম ওই অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে। তবে এখন পর্যন্ত নথিপত্র তলব ও সংগ্রহ ছাড়া অনুসন্ধান কাজের তেমন অগ্রগতি নেই বলে জানা গেছে।
অর্থাৎ একদিকে ফাঁকি দেওয়া সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায় ও অন্যদিকে দায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করার দুটো কাজই চলমান রয়েছে। যদিও রাষ্ট্রের ক্ষতিপূরণ ও রাজস্ব আদায়ের তেমন অগ্রগতি নেই বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
দুদকের অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. আকতারুল ইসলাম বলেন, চুক্তির আদ্যোপান্ত জানতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চুক্তির যাবতীয় রেকর্ডপত্র, ক্রয় প্রক্রিয়া, বিভাগীয় তদন্ত হয়ে থাকলে তার অনুলিপি ও তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিস্তারিত তথ্যসহ চার ধরনের নথি চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। কিছু নথিপত্র দুদকে এসেছে। এখন যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান রয়েছে।