১৩৪ রানের জবাবে পাকিস্তানের স্কোর ছিল ১৯ ওভার শেষে ১২১/৯, শেষ ওভারে ৬ বলে পাকদের সিরিজে সমতা আনতে দরকার ছিল ১৩ রান। ১ বলেই চার আর দ্বিতীয় বলে ১৯.২ ওভারে ব্যাটার ক্যাচ দিলেন, অলআউট পাকিস্তান ১২৫ রানে। প্রথম বার বাংলাদেশ টি২০ সিরিজে পাকিস্তানকে হারের স্বাদ নিতে বাধ্য করল। চলতি সিরিজের ১ম ম্যাচে ৭ উইকেটে জয়ের পর আজ মিরপুরের উইকেটে টস হেরে আগে ব্যাট করা বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৩৩ রানে অলআউট। জবাব দিতে নেমে অতিথি পাকিস্তান ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট, ৮ রানের জয় দিয়ে সিরিজ পকেটে ভরে নিল বাংলাদেশ।
সিরিজের শেষ ও তৃতীয় ম্যাচ কাল ২৪ জুলাই মিরপুরের উইকেটেই অনুষ্ঠিত হবে। ৯ বছর আগে ২০১৫ আর ২০১৬ সালে মিরপুরের উইকেটে টি২০ জিতে ছিল পাকদের বিপক্ষে। ৯ বছর পর আবারও সেই একই উইকেটে টানা দুই ম্যাচে জয় তুলেছে বাংলাদেশ। এই তো সেদিন লঙ্কার মাটিতে লঙ্কাকে ২-১ ব্যবধানে টি২০ সিরিজে হারিয়ে দেশে ফেরা বাংলাদেশ এখন আইসিসির র্যাঙ্কিংয়ে ৯ম নম্বরের দিকে তাকিয়ে আছে।
রাতে বাংলাদেশের দেয়া ১৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই আউট হন সাইম আইয়ুব। রান আউট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর দ্বিতীয় ওভারে আঘাত হানেন শরিফুল ইসলাম। তাসকিন আহমেদের বদলে আজ একাদশে জায়গা পেয়েছেন শরিফুল। তার বলে লেগ বিফোর উইকেট হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর চতুর্থ ওভারে ফের আঘাত হানেন শরিফুল। এবার তার বলে উইকেটরক্ষক লিটন দাসের গ্লাভসবন্দী হয়ে আউট হন ফখর জামান। এরপর ৫ম ওভারেই ম্যাচে প্রথমবার বোলিংয়ে এসেই পাকিস্তানের মিডল অর্ডার গুঁড়িয়ে দেন তানজিম সাকিব। সাকিবের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ৬ বলে খেলে রানের খাতা খোলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় হাসান নওয়াজকে। পরেই বলেই গোল্ডেন ডাক মেরে বিদায় নিতে হয় মোহাম্মদ নওয়াজকে। তিনি কট বিহাইন্ড হয়েই আউট হন। এদিকে দ্রুত ৫ উইকেট হারিয়ে অল সংগ্রহেই অল আউট হওয়ার শঙ্কায় ছিল সালমান আঘার দলে। দলীয় ৩০ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় ম্যান গ্রিনরা।
তবে প্রতিরোধ গড়েন আব্বাস আফ্রিদি ও ফাহিম আশরাফ। এ দুজন মিলে অষ্টম উইকেটে গড়েন ৪১ রানের জুটি। তবে জুটি ভাঙেন শরিফুল ইসলাম। তার বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন আফ্রিদি। আফ্রিদি ফেরার পর পাকিস্তানকে জেতাতে লড়ে গেছেন ফাহিম। এক পর্যায়ে জয়ের বেশ সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন তিনি। ৭ বলে ১৩ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের। এমন সময়ে রিশাদের বলে বোল্ড হয়ে ৩২ বলে ৫১ রান করেই ফিরতে হয় ফাহিমকে। এরপর শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান থামে ১২৫ রানে। শেষ ওভারের মোস্তাফিজের করা প্রথম বলেই ৪ হাঁকান আহমেদ দানিয়াল। এরপর জিততে ৫ বলে দরকার ছিল ৯ রান। দ্বিতোয় বলেও তুলেই মেরেছিলেন তিনি। তবে ক্যাচ আউট হলে এতে ৮ রানের জয়ে সিরিজ নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। বাংলাদেশের হয়ে আজ ৩ উইকেট নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, ২ উইকেট করে পেয়েছেন শেখ মেহেদী ও সাকিব, রিশাদ পেয়েছেন ১টি। এর আগে প্রথম ম্যাচ জয়ের পর আজ একাদশে দুইটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। ওপেনিংয়ে নেই তানজিদ তামিম। পারভেজ ইমনের সঙ্গে ম্যাচ ওপেন করতে নামেন নাইম শেখ। তবে নাইম সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। উইকেটকিপারের মুঠোবন্দী হয়ে ৭ বলে ৩ রান করে বিদায় নেন তিনি। এদিকে নাইম আউট হওয়ার পর ক্রিজে ইমনের সঙ্গী হন লিটন দাস।
তবে লাল-সবুজের দলের অধিনায়ক আজও দলের হাল ধরতে পারেননি। ৯ বলে ৮ রান করে সালমান মীর্জার বলে হাসান নওয়াজের মুঠোবন্দী হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। এরপর ক্রিজে ইমনের সঙ্গী হন তাওহিদ হৃদয়। তবে তিনিও দলের হাল ধরতে ব্যর্থ হন। ৩ বলে ০ রান করে রান আউট হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। এদিকে দ্রুত উইকেট হারানোর ধারাবাহিকতায় এরপর যোগ দেন ইমন নিজেও। ১ ছয় আর ১ চারে ১৩ রান করে আউট হন তিনি। এরপর শেখ মেহেদিকে নিয়ে দলের হাল ধরেন জাকের আলী। এ দুজন মিলে ৫ম উইকেটে গড়েন ৫৩ রানের জুটি। ২৫ বলে ৩৩ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলে আউট হন মেহেদী। এরপর শামীম হোসেন-তানজিম সাকিব-রিশাদ হোসেনও ফিরেন দ্রুতই। শেষ পর্যন্ত জাকের আলির ৫৩ রানের ইনিংসের সুবাদেই জির্ধারিত ২০ ওভারে ১৩৩ রানের সংগ্রহ গড়ে বাংলাদেশ।