খেলার মাঠে ডেস্ক
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচ
ওয়ানডের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজের সূচনাতেও হতাশ করেছে বাংলাদেশ। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জয় না পেলে হাতছাড়া হবে আরেকটি সিরিজ। পাল্লেকেলের পর এবার ভেন্যু বদল, নতুন চ্যালেঞ্জ ডাম্বুলায়। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে টিকে থাকার মিশন নিয়ে আজ রবিবার ডাম্বুলা স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ।
ম্যাচটি শুরু হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। ডাম্বুলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে রাঙগিরি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এখানেই গতকাল দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি খেলে বাংলাদেশ। এই মাঠে তারা টেস্ট ও ওয়ানডে খেললেও এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি খেলেনি। ডাম্বুলার রাঙগিরিতে বাংলাদেশের অভিষেক টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি মহাগুরুত্বপূর্ণ। ম্যাচটি লিটনদের জন্য সিরিজে ফেরার এবং চারিথ আসালাঙ্কাদের শ্রীলঙ্কার সিরিজ নিশ্চিতের।
তবে ডাম্বুলায় টি-টোয়েন্টিতে গড় স্কোর সাধারণত বেশি হয় না-প্রায়ই দেড়শর আশপাশেই থেমে যায় দলগুলো। তবে রাতের ম্যাচে পিচ তুলনামূলকভাবে ব্যাটিংবান্ধব হয়ে থাকে। সে কারণেই আজকের ম্যাচে টস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এটা আগেই জানা ছিল। হয়েছেও তাই, টস হেরে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের ২০ ওভার শেষে স্কোর ১৭৭/৭।
যদিও শুরুটা ভাল ছিল না, গত কিছু দিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স একেবারে যাচ্ছেতাই। ব্যাটিং, বোলিং-কোনও বিভাগ নিয়েই স্বস্তিতে নেই ক্রিকেটাররা। গতকাল রবিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজ বাঁচাতে চাইলে তাই ব্যাটিংয়ে ভালো করার কোনও বিকল্প ছিল না। ডাম্বুলার অচেনা কন্ডিশনে বাংলাদেশ দল কেমন করে সেটিই দেখার। যদিও দলের বেশ কিছু খেলোয়াড়ের এখানে ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই নুয়ান থুসারার ইয়র্কার কোনোভাবে ঠেকান পারভেজ হোসেন ইমন। লেগ বাইয়ে আসে এক রান। পঞ্চম বলে ডট দেন। পরের বল ব্যাট-পায়ের মাঝ দিয়ে ঢুকে তার স্টাম্প ভাঙে। তিন বল খেলে ডাক মারেন ইমন। ১ ওভারে ৫ রানে এক উইকেট হারালো বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটি ভেঙেছিল ৫ রানে। পারভেজ হোসেন ইমন বোল্ড হন ইনিংসের ষষ্ঠ বলে। দ্বিতীয় ওভারে বিদায় নিলেন আরেক ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। দলীয় ৭ রানে তিনি ৫ রান করে শর্ট থার্ড ম্যানে কুশল পেরেরার দারুণ ক্যাচ হন তিনি। বিনুরা ফার্নান্ডোর বলে শেষ হয় তার ৮ বলের ইনিংস। দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারানো বাংলাদেশকে ছন্দে ফেরাচ্ছেন লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয়। দুজনের জুটিতে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ করেছে ৩৯ রান। ২ উইকেট হারিয়েছে তারা। লিটন ১৬ ও হৃদয় ১৭ রানে অপরাজিত আছেন। নবম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফাইন লেগ দিয়ে ছক্কা মারেন লিটন দাস। ১৬ বল পর প্রথম বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের রান পঞ্চাশ পার হয়েছে। ১২তম ওভারে বল হাতে নিয়ে থিতু হওয়া ব্যাটার তাওহীদ হৃদয়কে ফেরালেন বিনুরা ফার্নান্ডো। ২৫ বলে ৩১ রান করে কুশল পেরেরার ক্যাচ হয়েছেন তিনি। তাতে ৫৫ বলে ৬৯ রানের জুটি ভেঙেছে। ১১.১ ওভারে বাংলাদেশ ৭৬ রানে ৩ উইকেট হারায়। দুই বল পর বিনুরার স্লোয়ারে নুয়ান থুসারার ক্যাচ হন মেহেদী হাসান মিরাজ। স্কুপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ক্যাচ দিলেন তিনি। ২ বলে ১ রান তার। ১১.৪ ওভারে ৭৮ রানে চতুর্থ উইকেট পড়লো। জেফ্রি ভ্যান্ডারসের বলে ডাবল রান নিলেন শামীম হোসেন। ১৩.৪ ওভারে বাংলাদেশ ৪ উইকেট হারিয়ে করে ১০০ রান। ব্যাটিংযে ফর্মে ছিলেন না বলে সমালোচিত হচ্ছিলেন লিটন দাস। তার অধিনায়কত্বও হয়ে ওঠে প্রশ্নবিদ্ধ। ডাম্বুলায় নিজেকে ফিরে পেলেন তিনি। ৩৯ বলে হাফ সেঞ্চুরি করলেন লিটন। ১৩ ইনিংস পর ফিফটির দেখা পেলেন তিনি।
২০২৪ সালের জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে কিংসটনে আগের হাফ সেঞ্চুরি ছিল তার। ১৪.৪ ওভারে মাহিশ থিকশানাকে নিজের তৃতীয় ছক্কা মেরে ১২তম পঞ্চাশ ছোঁন লিটন, একটি চারও রয়েছে। ১৭.৩ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দেড়শ ছাড়ালো। বিনুরা ফার্নান্ডোকে লিটন দাস ছক্কা মেরে দেড়শ পার করেন। চোখ ধাঁধানো সব শটে লিটন দাস নিজেকে ফিরে পেলেন। ৩৯ বলে ১২তম ফিফটি করার পর তিনি থামলেন ৭৬ রান করে। ১৮.১ ওভারে মাহিশ থিকশানার বলে শর্ট থার্ডে নুয়ান থুসারার ক্যাচ হলেন তিনি। ৫০ বলে ১ চার ও ৫ ছয়ে সাজানো তার ইনিংস। দলীয় ১৫৫ রানে ৫ উইকেট পড়লো বাংলাদেশের। শামীম হোসেনের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৩৯ বলে ৭৭ রানের। শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কা মেরেছিলেন শামীম হোসেন। ফিফটি থেকে তখন ২ রান দূরে তিনি। পরের বলে সিঙ্গেল নিতে চাইলেন। স্ট্রাইকিংয়ে আসার আগেই কুশল মেন্ডিস জাকের আলীকে রান আউট করেন। পরের বলে রিশাদ হোসেন বলে ব্যাট লাগানোর আগেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বল ব্যাটে লাগে। তবে স্ট্রাইক প্রান্তে আসার আগেই কুশলের থ্রোয়ে রান আউট শামীম। পরপর দুই বলে রান আউট হলো বাংলাদেশের দুই ব্যাটার।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি: বাংলাদেশ ২০ ওভারে ১৭৭/৭ (রিশাদ ০*, সাইফউদ্দিন ৬*, ইমন ০, তানজিদ ৪, হৃদয় ৩১, মিরাজ ১, লিটন ৭৬, জাকের ৩, শামীম ৪৮)।