Sunday, 27 July 2025

যানবাহনের চাকা থেমে গেছে: দুর্ভোগে জনসাধারণ


তানভীর ভুইয়া, বিজয়নগর প্রতিনিধি 

অনির্দিষ্টকালের সিএনজি চালিত অটোরিকশার কর্মবিরতি, চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা

--------------------------------------------------


চালকরা নেমেছে কর্মবিরতিতে, থমকে গেছে সড়কপথ
রোববার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে অনির্দিষ্টকালের সিএনজি চালিত অটোরিকশার কর্মবিরতি। জেলার প্রায় প্রতিটি স্ট্যান্ডেই দেখা গেছে অচলাবস্থা। যাত্রীদের দীর্ঘ অপেক্ষা, হেঁটে বা বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা যায় অনেককে। বিকল্প যানবাহনেও ভাড়া বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।




বিকল্প যানে বাধা, কিছু এলাকায় হামলার অভিযোগ -
বিভিন্ন যাত্রী অভিযোগ করেছেন, সিএনজি চালকেরা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বা টমটমে যাত্রী পরিবহনেও বাধা দিচ্ছেন।



এক পথচারী বলেন, “গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাচ্ছি, কিন্তু সিএনজি নেই। বাধ্য হয়ে টমটমে উঠলেও সেটাও চলতে দিচ্ছে না ওরা। মাঝ রাস্তায় থামিয়ে দিচ্ছে। এটা সহ্য করা যাচ্ছে না।”



কিছু এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় হামলার খবরও পাওয়া গেছে, যা পরিস্থিতিকে আরও আতঙ্কজনক করে তুলেছে। এবং আজকে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিভিন্ন কলেজ ও মাদ্রাসায় এইচএসসি/আলিম সমমানের পরিক্ষা চলমান রয়েছে। চালকদের এই কর্মবিরতিতে পরিক্ষার্থীদের ও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।




 মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ ও দাবিসমূহ
সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, “ট্রাফিক পুলিশের ঘুষ, হয়রানি, বিনা কারণে গাড়ি জব্দ ও লাইসেন্স সংক্রান্ত দুর্নীতির প্রতিবাদে আমরা এই কর্মসূচি নিয়েছি।”



তাদের উল্লেখযোগ্য অভিযোগসমূহ:
সড়কে পুলিশি হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ দাবি

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও পারমিট পেতে দুর্ভোগ

বর্তমানে অনেকগুলো সিএনজি জব্দ অবস্থায়

সিএনজি লাইসেন্স কার্যক্রম বন্ধ


তাদের দাবি:
*আটককৃত গাড়ি নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে
*পারমিট অনুযায়ী জেলার সর্বত্র চলাচলের অনুমতি
 *ট্রাফিক পুলিশের নির্যাতন বন্ধ করতে হবে



তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে।” এর আগে শনিবার শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশও করেন সিএনজি মালিক-চালকেরা।



পুলিশ প্রশাসনের বক্তব্য
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, “যেসব যানবাহনের কাগজপত্র নেই, সেগুলোকেই আটক করা হচ্ছে। কাগজ দেখালে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে কেউ হয়রানির শিকার হচ্ছেন না।”



তিনি আরও বলেন, “তারা চাইছেন, কোনো গাড়ি যেন পুলিশ ধরতে না পারে—এটা তো নিয়মের বাইরে। তাছাড়া এ বিষয়ে কোনো প্রতিনিধি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”



নিরব সড়ক, অসহায় যাত্রী আর মালিক-শ্রমিকদের ক্ষোভের মাঝে প্রশাসনের অবস্থান – এই তিনটি রূপেই ফুটে উঠছে বর্তমান সংকট।এই অচলাবস্থার দ্রুত সমাধান না হলে জনদুর্ভোগ আরও বাড়বে, যা জেলা শহরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে সম্পূর্ণভাবে ব্যাহত করতে পারে।