হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম পাইকারি বাজারে কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে নেই তার প্রভাব। একদিকে সবজির বাজারে অস্থিরতা অন্যদিকে পেঁয়াজের ঊর্ধ্বগতিতে দিশেহারা ভোক্তারা। কিছুতেই যেন তার ঝাঁজ কমছে না।
এদিকে গরিবের পুষ্টিখ্যাত সহজলভ্য ফার্মের মুরগির ডিমেও চরম অস্বস্তিতে ক্রেতারা। ধাপে ধাপে বাড়ি দূরে চলে যাচ্ছে ডিম।
পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে কিছুটা কম হলেও খুচরা বাজারে দাম বেশি থাকায় ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কয়েক সপ্তাহ ধরেই পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরবরাহ কম ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না।
গাবতলীর এক খুচরা বিক্রেতা জাহেদ হোসেন বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকেই উচ্চ দামে পেঁয়াজ কিনছি। পরিবহন খরচ, ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ হয়ে খুচরা বাজারে দাম আরও বেড়ে যায়। এতে আমাদের কিছু করার নেই।
পাইকারি বাজারে দাম কিছুটা কম হলেও খুচরা বাজারে সেই দাম পৌঁছাতে পৌঁছাতে বেশ বেড়ে যাচ্ছে। এক খুচরা বিক্রেতা বলেন, আমরা পাইকারি থেকে ৬৮-৭০ টাকায় কিনছি, কিন্তু পরিবহন, ভাড়া ও অন্যান্য খরচ যোগ হয়ে খুচরায় ৭৫-৮০ টাকার নিচে বিক্রি করা সম্ভব হয় না।
অন্যদিকে, ক্রেতাদের অভিযোগ—পাইকাররা ইচ্ছামতো দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন, সরকারের বাজার মনিটরিং যথেষ্ট নয়। ডিমের দামও নাগালের বাইরে
পেঁয়াজের পাশাপাশি ডিমের দামও ক্রেতাদের হতাশ করছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও গাবতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় ডিমের ডজন ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গৃহিণী সুমি আক্তার বলেন, এভাবে ডিমের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষ কী খাবে? আগে হালিতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় কিনতাম, এখন ৫০ টাকা লাগছে। বাজারের সব পণ্যের দামই হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
অর্থনীতিবিদদের মতে, সরবরাহ শৃঙ্খলা ঠিক না থাকায় এবং মৌসুমি অজুহাতে অনেক ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা নিচ্ছেন। তারা মনে করেন, সরকারের কঠোর নজরদারি ছাড়া নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক হবে না।
সরকারি তদারকি ও বাজার নিয়ন্ত্রণ
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাজারে নিয়মিত অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে কর্মকর্তাদের স্বীকারোক্তি, বাজারে যদি সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকে এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে অসাধু সিন্ডিকেট থাকে, তাহলে অভিযান দিয়ে একা দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।