দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বড়শি শিকারে সাড়ে ৮ কেজি কাতলা ধরে ইলিয়াসের ৩ লাখ টাকা জয়! - Durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Monday, September 15, 2025

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বড়শি শিকারে সাড়ে ৮ কেজি কাতলা ধরে ইলিয়াসের ৩ লাখ টাকা জয়!


জহির শাহ্ , ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় কালীকচ্ছ কলেজের বিখ্যাত দিঘিতে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক রোমাঞ্চকর বড়শি মৎস্যশিকার প্রতিযোগিতায় কিশোরগঞ্জের অভিজ্ঞ শিকারি ইলিয়াস মিয়া (৪৫) একটি বিশালাকার কাতলা মাছ ধরে সবাইকে চমকে দিয়েছেন। মাছটির ওজন ছিল পুরো ৮ কেজি ৪০ গ্রাম, যা প্রতিযোগিতার সেরা শিকার হিসেবে তাঁকে প্রথম পুরস্কারের ৩ লাখ টাকা এনে দিয়েছে। মাছটি ধরার মুহূর্তে দিঘির চারপাশে উপস্থিত হাজারো দর্শকের মধ্যে উল্লাসের ঢেউ উঠেছে, যেন একটা উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়েছে!


প্রতিযোগিতাটি সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলেছে। এতে অংশ নিয়েছিলেন মোট ৭০ জন শৌখিন শিকারি, যাঁরা ৩৫টি মাচায় বিভক্ত হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। প্রত্যেক মাচার জন্য ২৮ হাজার টাকা প্রবেশ ফি দিতে হয়েছে। শিকারিরা শুধু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকেই নয়, ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর এবং হবিগঞ্জ থেকেও এসে যোগ দিয়েছিলেন। ইলিয়াস মিয়ার বড়শিতে মাছটি ধরা পড়তেই দর্শকরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন, চারদিক থেকে ভেসে আসে "বড় মাছ! বড় মাছ!" চিৎকার। আয়োজকরা অবিলম্বে তাঁকে ৩ লাখ টাকার চেক হাতে তুলে দেন। বিজয়ী ইলিয়াস মিয়া আনন্দিত কণ্ঠে বলেন, "আমি অনেক জায়গায় শিকারে গিয়েছি, কিন্তু এমন বড় পুরস্কার প্রথমবার পেলাম। এই আনন্দ কথায় প্রকাশ করা যায় না।"


প্রতিযোগিতায় অন্যান্য বিজয়ীরা ছিলেন যথাক্রমে: দ্বিতীয় স্থানে সরাইলের কালীকচ্ছের আবু শামীম মোহাম্মদ জাবেদ, যিনি ৬ কেজি ৩২০ গ্রামের কাতলা ধরে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন। তৃতীয় হয়েছেন সরাইল সদরের আবদুল কাদির, ৫ কেজি ৮৬০ গ্রামের কাতলা শিকার করে ৭৫ হাজার টাকা জিতেছেন। চতুর্থ স্থানে হবিগঞ্জের আজগর ভান্ডারি (৫ কেজি ৪৪০ গ্রাম, ৫০ হাজার টাকা), পঞ্চমে সরাইলের আবদুর রাকিব (৫ কেজি ২৬০ গ্রাম, ৪৫ হাজার টাকা), ষষ্ঠে সরাইলের সেলিম মিয়া (৫ কেজি ৬০ গ্রাম, ৪০ হাজার টাকা) এবং সপ্তমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের জামাল হোসেন (৪ কেজি ৬০ গ্রাম, ৩০ হাজার টাকা)।


এই প্রতিযোগিতায় শিকারিরা বড়শি ফেলে মাছের সঙ্গে লড়াইয়ের রোমাঞ্চ অনুভব করেছেন। কয়েকজন ভাড়াটে সহকারীও নিয়োগ করেছিলেন, যাঁদের জন্য অতিরিক্ত ৩ হাজার টাকা খরচ হয় এবং পুরস্কারের ১০ শতাংশ ভাগ দেওয়ার রীতি রয়েছে। দিঘিটি সরাইল সরকারি কলেজ এবং কালীকচ্ছ পাঠশালা উচ্চবিদ্যালয়ের মালিকানায় রয়েছে, যা তিন বছরের জন্য ১৭ লাখ টাকায় হাবিবুর রহমানসহ ছয়জনকে ইজারা দেওয়া হয়েছে। হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, "এই দিঘিতে বছরে পাঁচ-ছয়বার এমন প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে। এটি সরাইলের শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য, যা এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহ জাগিয়ে রাখে।"


দিঘির চারপাশে হাজার হাজার দর্শকের ভিড়ে পুরো এলাকা উৎসবময় হয়ে উঠেছে। শিকারিদের চিৎকার, মাছের টানাটানি এবং পুরস্কার বিতরণের মুহূর্তগুলো সবাইকে মুগ্ধ করেছে। দিনের শেষে বিজয়ীরা পুরস্কার নিয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন, আর দর্শকরা পরের প্রতিযোগিতার অপেক্ষায় রয়েছেন। এমন ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠানগুলো স্থানীয় সংস্কৃতিকে জীবন্ত রাখছে।