দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। একের পর এক এলাকা দখল করছে রুশ সেনারা - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Friday, 1 March 2024

একের পর এক এলাকা দখল করছে রুশ সেনারা


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
গত কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেন যুদ্ধের ভর রাশিয়ার দিকে ঝুঁকে পড়তে দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্ক প্রদেশের গুরুত্বপূর্ণ শহর আভদিভকার পতনের পর অল্প সময়ের ব্যবধানে বড় রকমের প্রতিরোধ ছাড়াই বেশ কিছু গ্রাম দখল করেছে রুশ সেনারা।


আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সপ্তাহ খানেক ধরে পূর্বাঞ্চলীয় ফ্রান্টলাইনে প্রতিরক্ষা লাইন টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করছে ইউক্রেনীয় সেনারা। দেশটির সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আর্টিলারি শেল এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্রের ঘাটতির কারণে ১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইন ধরে রাখা তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে।


চার মাস আক্রমণের পর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি আভদিভকা শহরটি দখল করে নেয় রুশ সেনারা। আভদিভকা শহর দখলের পর থেমে যাননি তারা। বরং দ্রুততার সঙ্গে সামনে আগানোর চেষ্টা করছেন, যাতে শহরটির কাছাকাছি নতুন করে কোনো প্রতিরক্ষা বুহ্য গড়ে তোলার সময় না পায় ইউক্রেনীয়রা।


২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনীয় সেনারা আভদিভকা থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমের লাস্টোচকিনা গ্রাম থেকেও পিছু হটতে বাধ্য হয়। তারা সেখানে রাশিয়ার লাগাতার আক্রমণের মুখে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা গড়ে তোলার সুযোগই পাননি।


ডিপস্টেটইউএ নামে পরিচিত একজন ইউক্রেনীয় সামরিক প্রতিবেদক টেলিগ্রাম চ্যানেলে লিখেছেন, ‘গ্রামটিতে কোনও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ছিলো না। আভদিভকা থেকে প্রত্যাহার করা সেনারা সেখানে কোনওরকম জায়গা নিয়েছিল মাত্র। ৭ লাখ অনুসারীর এই চ্যানেলে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের একইরকম পশ্চাদপসরণ অন্যান্য জায়গায়ও ঘটবে।


তার এই পোস্টের তিন দিন পর লাস্টোচকিনার উত্তর ও দক্ষিণে স্টেপোভে এবং সিভর্নে গ্রামে রাতভর ভয়াবহ যুদ্ধের পর পিছু হটে ইউক্রেনীয় সৈন্যরা।


এই এলাকায় যুদ্ধরত ইউক্রেনীয় বাহিনীর তাভরিয়া গ্রুপের কমান্ডার ওলেক্সান্ডার টারনাভস্কি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি তাৎক্ষণিকভাবে বলেছিলেন, তোনেঙ্কা-ওরলিভকা-বারডিচি এই তিন গ্রামের প্রতিরক্ষা লাইন ‌‘স্থিতিশীল’ হয়েছে। কিন্তু তার বক্তব্যেও যে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে সেটা পরদিনই প্রমাণ হয়ে যায়।


২৮ ফেব্রুয়ারি জিওলোকেটেড (ভূ-অবস্থানকৃত) ফুটেজে রাশিয়ান সৈন্যদের ওরলিভকা গ্রামের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে।


লিখোভি বলেছেন, রাশিয়ান বাহিনী আক্রমণকারী ইউনিটের আকার বাড়িয়েছে; স্কোয়াড থেকে প্লাটুন, এমনকি কোম্পানিতে।


একটি স্কোয়াড অর্ধ ডজন সৈন্যের মতো ছোট হতে পারে। প্লাটুন ৫০ এর মতো বড় হতে পারে এবং একটি কোম্পানির সৈন্য সংখ্যা ২০০ তে পৌঁছতে পারে।


গত মে মাসে দখল নেয়া পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুত শহরে পশ্চিমদিকের গ্রাম ইভানিভস্কের উপকণ্ঠে অগ্রসর হয়েছে বলে সম্প্রতি দাবি করেছে রুশ সেনারা।


এদিকে রাশিয়ান বাহিনী রবোটিনে গ্রামও পুনরুদ্ধারের দাবি করেছে। জাপোরিঝিয়া অঞ্চলের গ্রামটি ইউক্রেনীয় সেনারা গত গ্রীষ্মের পাল্টা আক্রমণে পুনরুদ্ধার করেছিল।


২৪ ফেব্রুয়ারি জিওলোকেটেড ফুটেজে রাশিয়ার সেনাদের রবোটিনে গ্রামের কেন্দ্রে দেখা গেছে। রাশিয়ান সৈন্যরা ক্রাইঙ্কি থেকেও ইউক্রেনীয় সেনাদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্য আক্রমণ চালিয়েছে।

 

রুশ বাহিনী কুপিয়ানস্ক এলাকায়াতেও নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করার বলে দাবি করেছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কুপিয়ানস্কের দিকের সেনা ইউনিটগুলো তাদের কৌশলগত অবস্থানের উন্নতি করেছে এবং দোনেস্ক পিপলস রিপাবলিকের খারকিভ অঞ্চলের সিনকোভকা এবং টারনির বসতিগুলোর কাছে শত্রু বাহিনীর সেনা এবং সরঞ্জামের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

ফ্রন্টলাইনে চাপ বাড়াচ্ছে রুশ সেনারা

গত বছর অভিযান শুরুর পর অল্প সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের পাশাপাশি উত্তর ও পশ্চিমের বিভিন্ন ফ্রন্টে ব্যাপক সাফল্য পায় রুশ সেনারা। এমনকি তারা দেশটির রাজধানী কিয়েভের দোরগোড়ায় পৌঁছে যায়। কিন্তু পশ্চিমাদের সহায়তায় ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে কিয়েভ, সুমেসহ উত্তরাঞ্চলীয় ফ্রন্ট থেকে পিছু হটে রাশিয়া। এরপর উত্তরাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশ খারকিভ এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় খেরসন অঞ্চলের বড় ভূখণ্ড পুনর্দখল করে ইউক্রেন।


এই অবস্থায় রুশ কৌশলে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। তাড়াহুড়োর চেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি একটি যুদ্ধের পথে হাঁটে ক্রেমলিন। এরমধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং দুই পক্ষের ব্যাপক প্রাণহানির পর গুরুত্বপূর্ণ বাখমুত শহর দখল করে নেয় রাশিয়া। এই লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আলোচিত ওয়াগনার বাহিনী।


কিন্তু গত বছর রাশিয়ার কাছে হারানো এলাকা পুনরুদ্ধারের জন্য কিয়েভের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত গ্রীষ্মকালীন পাল্টা আক্রমণ ঠেকিয়ে দেয় রাশিয়া। এই পাল্টা আক্রমণে ন্যাটোর দেয়া অত্যাধুনিক ট্যাংক এবং সাজোয়া যানসহ ইউক্রেনের বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম ধ্বংস হয়। নিহত হন হাজার হাজার সেনা। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই পাল্টা আক্রমণে ক্রিমিয়া পর্যন্ত স্বাধীন করার ঘোষণা দিলেও, বাস্তবে ছোট কয়েকটি গ্রাম ছাড়া তেমন কিছুই অর্জন করতে পারেননি।


ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণের সময় রাশিয়া পুরোপুরি রক্ষণাত্মক ভূমিকায় থাকলেও সম্প্রতি প্রায় সব ফ্রন্টে আক্রমণ শুরু করেছেন তারা। ইউক্রেনের পাল্টা আক্রমণে হাতছাড়া হওয়া বেশ কিছু জায়গা এরইমধ্যে ফের দখলে নিয়েছে রুশ সেনারা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে রুশ সেনাদের সবচেয়ে বড় অর্জন আভদিভকার দখল।