স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পক্ষে-বিপক্ষে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ও বেলা একটার দিকে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দুটি হয়।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পক্ষে কর্মসূচিটি ‘মুরাদনগর উপজেলার সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’-ব্যানারে হয়েছে। এতে মুরাদনগরের অন্তত ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক শ শিক্ষার্থী অংশ নেন। অন্যদিকে বিপক্ষের কর্মসূচিটি হয়েছে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী ও জনতা’-ব্যানারে। এতেও শতাধিক তরুণ-যুবক অংশ নেন।
গত ৩০ এপ্রিল আসিফ মাহমুদের পদত্যাগের দাবিতে মুরাদনগরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও সাধারণ জনতা’ ব্যানারে একটি বিক্ষোভ মিছিল হয়। সেটির পাল্টা হিসেবে আজ বেলা সাড়ে ১১টার কর্মসূচিটি হয়। ৩০ এপ্রিলের কর্মসূচিটি বৈষম্যবিরোধীদের ব্যানারে হলেও তাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেউ ছিলেন না বলে জানান জুলাই অভ্যুত্থানের প্ল্যাটফর্মটির মুরাদনগর উপজেলার আহ্বায়ক উবায়দুল হক সিদ্দিকী। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদের অনুসারীরা এই কর্মসূচি পালন করিয়েছেন বলে তাঁর অভিযোগ।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত ৩০ এপ্রিল উপজেলার কাজী নোমান আহম্মেদ ডিগ্রি কলেজের কিছু শিক্ষার্থীকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। এর সঙ্গে কলেজের শিক্ষার্থীদের কোনো প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পৃক্ততা ছিল না। প্রকৃত ঘটনা গোপন রেখে ভুল তথ্য দিয়ে এবং ভয় দেখিয়ে তাঁদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
এই কর্মসূচির পাল্টা হিসেবে বেলা একটার দিকে উপজেলা সদরের আল্লাহু চত্বরে মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। এতে বক্তব্য দেন নাহিদুল ইসলাম নামের এক তরুণ। গত ৩০ এপ্রিলের কর্মসূচিতেও উপদেষ্টা আসিফের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়েছিলেন তিনি। তিনি দাবি করেন, ৩০ তারিখের কর্মসূচিতে কাউকে জোর করে আনা হয়নি। বরং আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে যাঁরা কর্মসূচিতে এসেছেন তাঁদের জোর করে আনা হয়েছে।
মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুর রহমান আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, একপক্ষ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এবং আরেক পক্ষ দুপুর একটার দিকে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি পালন করে। কোনো ধরনের সহিংসতা যেন না ঘটে এ জন্য পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত কোনো সমস্যা হয়নি। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
গত ৩০ এপ্রিল উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করার সময় পুলিশের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া বিক্ষোভ মিছিলের ব্যানার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই দিন ওসি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা কোনো প্রকার অনুমতি ছাড়া ওই বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজনে করে। এ জন্য তিনি সেখানে গিয়ে তাঁদের বাধা দিয়েছেন শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকার জন্য।