আবহাওয়া ডেস্ক :
বঙ্গোপসাগরের লঘুচাপ সৃষ্টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য তিন নম্বর সতর্কসংকেত দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে এই লঘুচাপটি নিম্নচাপ ও পরবর্তীতে গভীর নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এর প্রভাবে সারাদেশে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ভারী বর্ষণ হতে পারে।
বঙ্গোপসাগরে চলতি মাসে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ এবং এদের মধ্য থেকে এক বা দুটি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। এসব নিম্নচাপ থেকে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে। কিন্তু হিসেবের গড় মিলে এবার নির্ধারিত সময়ের আট দিন আগেই মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করায় এই লঘুচাপ বা নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।
তাহলে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটির ভবিষ্যৎ কি হতে পারে? এই প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন,‘ বঙ্গোপসাগরে আজ মঙ্গলবার একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তবে এই লঘুচাপটি বৃহস্পতিবার রাত বা শুক্রবার সকালে গভীর নিম্নচাপ আকারে স্থলভাগে উঠতে পারে। আর স্থলভাগে তা স্থল নিম্নচাপ আকারে বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে অতিক্রম করতে পারে। এর প্রভাবে সারাদেশে ভারী বর্ষণ হতে পারে।’
এদিকে এপ্রিল ও মে মাস এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস হলে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট সময়। এই সময় সবচেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে। এবিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘মে মাসের শেষার্ধ হলো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির সবচেয়ে উর্বর সময়। আর একারণে বর্ষার পূর্বে বেশি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে বর্ষা শুরু হলে সাধারণত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না।’
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়গুলোর উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত বছরের ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত করেছিল উপকূলে। এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ মে ‘মোখা’, ২০২১ সালের ২৭ মে ‘ইয়াস’, ২০২০ সালের ২১ মে ‘আম্ফান’, ২০১৯ সালের ৪ মে ‘ফনী’, ২০১৭ সালের ৩১ মে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’, ২০১৬ সালের ২২ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানা’, ২০১৩ সালের ১৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’, ২০১০ সালের ২১ মে ঘূর্ণিঝড় ‘লায়লা’, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’, ২০০৮ সালের ৩ মে আঘাত ঘূর্ণিঝড় ‘নার্গিস’, ২০০৭ সালের ১৫ মে ঘূর্ণিঝড় ‘আকাশ’ উপকূলে আঘাত করেছিল। তবে মৌসুমি বায়ু সেট হওয়ার পর ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ ২ আগস্ট মিয়ানমার উপকূলে আঘাত করেছিল। তবে এবারের আবহাওয়া ব্যতিক্রম।