দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। নিষেধাজ্ঞার পরেও আদিনা মসজিদে হিন্দু সাধুর পূজা, চলছে বিতর্ক - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Wednesday, 21 February 2024

নিষেধাজ্ঞার পরেও আদিনা মসজিদে হিন্দু সাধুর পূজা, চলছে বিতর্ক


আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার প্রাচীন আদিনা মসজিদে গত রোববার হঠাৎ করেই পূজার আয়োজন করেন হিন্দু সাধু হিরণ্ময় গোস্বামী। ইতোমধ্যে সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।


ভিডিওটিতে দেখা যায়, বাঙালী সাধু হিরণ্ময় গোস্বামী আদিনা মসজিদ চত্বরে হিন্দু রীতি মেনে পূজা করছেন এবং এক ব্যক্তি তাকে বাধা দিচ্ছেন। এক সময় দুই জনের মধ্যে তুমুল কথার কাটাকাটি হয়। গোস্বামী বলছেন, কোথায় লেখা আছে যে এখানে প্রণাম করা যাবে না, অন্যদিকে ওই সাদা পোশাকে থাকা ওই পুলিশ কর্মী তাকে বলছেন যে এখানে পূজা দেয়া যায় না।


প্রত্মতাত্ত্বিক নির্দশন হিসাবে সংরক্ষিত এই মসজিদে নামাজ পড়া হয় না। হিন্দু সাধু গোস্বামীর পূজা করার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গত তিন দিন ধরে আলোচনায় উঠে এসেছে আদিনা মসজিদের নাম।


এ বিষয়ে গোস্বামী গণমাধ্যমকে বলেন, ভাগবত পাঠ করতে মালদায় এসেছিলাম। যে স্থান আমাদের কোনও পীঠস্থান, সেটা আমাদের বড় আদরের, আমাদের বন্দনীয়। গৌরেশ্বরের একটা বড় পীঠস্থান হচ্ছেন আদিনাথ। সেটা আমাদের আরাধ্য পীঠ। সেই সূত্রেই আমাদের আগমন।


তবে ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগ বলছে আদিনা মসজিদ তাদের সংরক্ষিত সৌধ। দপ্তরের এক পুরাতাত্ত্বিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, “আমাদের সৌধগুলির দুটি ভাগ আছে – একটা লিভিং আরেকটা নন-লিভিং। আদিনা মসজিদ একটি নন-লিভিং সৌধ এবং আইন অনুযায়ী এখানে কোনও ধরনের পূজা-অর্চনা, নামাজ পড়া যায় না। কোনও ধর্মীয় রীতি নীতিই এখানে পালন করা যায় না। আদিনা মসজিদ সংরক্ষিত সৌধের তালিকায় যুক্ত। সেখানে নামাজ পড়া বা ধর্মীয় কোন অনুষ্ঠান হত না। সেই হিসাবে নতুন করে নামাজ পড়া বা সেখানে পূজা দেয়া আইন বিরুদ্ধ।


আইন ভেঙ্গে কেন তাহলে পূজা করলেন গোস্বামী? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা সনাতনী সম্পদ। তবে সনাতনী যে চিহ্নাদি এখানে রয়েছে, সেগুলো মিটিয়ে দেয়ার একটা বিপুল চেষ্টা চলছে। আমাদের একটাই উদ্দেশ্য, যাতে আমরা এই সনাতনী সম্পদকে পুনরুদ্ধার করতে পারি।

 
এ বিষয়ে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির গবেষক ও লেখক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, নব্বইয়ের দশকে একটা বই লেখেন অরুণ শৌরিসহ আরও কয়েকজন। বইটার নাম ছিল হিন্দু টেম্পলস হোয়াট হ্যাপেণ্ড টু দেম, অর্থাৎ হিন্দু মন্দিরগুলোর কী হয়েছিল, তা নিয়ে একটা প্রাথমিক সমীক্ষা। সারাদেশে কোন কোন মসজিদ পুরনো মন্দির ভেঙ্গে তৈরি করা হয়েছিল, তার একটা প্রাথমিক তালিকা দেয়া হয় বইটিতে। ওই বইতেই প্রথম লেখা হয় যে আদিনাথ মন্দির ভেঙ্গে আদিনা মসজিদ বানানো হয়েছিল। কিন্তু আমি বহু খুঁজেও এর কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি পাই নি।


আদিনা মসজিদের নির্মাণ শেষ হয় ১৩৭৪ সালে। সেই সময়ে সেটাই ছিল উপমহাদেশের বৃহত্তম মসজিদ। তবে এই ঘটনাকে নির্বাচনের আগে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা বলে মনে করছেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের নেতা মুহম্মদ কামরুজ্জামান।


তিনি বলেন, আদিনা মসজিদে নামাজ পড়া না হলেও সেটি প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতার নিদর্শন। সেখানে কেন পূজা করতে হবে, তাও বেনারস থেকে এসে? বাংলার মানুষ কি পূজা করে না? উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা এটা বোঝাই যাচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা