দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। খেলা বন্ধ হয়নি, আরেকটা গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেন - নাহিদ - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Friday, 18 July 2025

খেলা বন্ধ হয়নি, আরেকটা গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেন - নাহিদ


নারায়ণগঞ্জ প্রতিবেদক :  

* আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল: আখতার
* আওয়ামী লীগের ডেডলিস্টে আছি আমরা: হাসনাত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর বলেছিলাম বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে হবে। এই দেশ যে সিস্টেমে চলে এর পরিবর্তন ঘটাতে হবে। এই সিস্টেমের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ হচ্ছে এই নারায়ণগঞ্জ। যেখানে পরিবারতন্ত্র, মাফিয়াতন্ত্র, গডফাদারতন্ত্র সব মিলেমিশে একাকার ছিল। নারায়ণগঞ্জের যে সিস্টেম এই একই সিস্টেমে পুরো দেশ এতদিন পরিচালিত হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জে কয়েকটি পরিবার বছরের পর বছর নিয়ন্ত্রণ করে এসেছিল। এই নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে তারা দখলদারিত্ব করেছে, চাঁদাবাজি করেছে, গুম করেছে, সন্ত্রাসী করেছে।


তিনি বলেন, এই মাফিয়া সিস্টেমের সঙ্গে আমরা আর খেলবো না। এই মাফিয়াতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা গণঅভ্যুত্থান করেছিলাম। তাই খেলার নিয়ম বদলাতে হবে। কিন্তু আমরা জানি খেলার নিয়ম এখনো বদলায়নি। নারায়ণগঞ্জে এখনো খেলা বন্ধ হয়নি। এই খেলা বন্ধ করার জন্য আরেকটি গণঅভ্যুত্থানের প্রস্তুতি নেন। 


শুক্রবার (১৮ জুলাই) নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বিজয় স্তম্ভের সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।


নাহিদ ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জে জুলাই পদযাত্রা’র তোরণ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সন্ত্রাসীরা আজকের গণজোয়ার বন্ধ করতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। জুলাই আন্দোলনে নারায়ণগঞ্জবাসী বুকের রক্ত দিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। এই নারায়ণগঞ্জকে রক্ষা করেছিল। এদিকে নারায়ণগঞ্জ ওইদিকে সাভার আশুলিয়ায় প্রতিরোধ তৈরি হয়েছিল বলেই ঢাকার মানুষ রাজপথে নেমে আসতে পেরেছিল। তাই আমরা নারায়ণগঞ্জকে শ্রদ্ধা করি। গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাসে এই নারায়ণগঞ্জের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখা থাকবে।


তিনি বলেন, আজ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরোধ দিবস। যখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, তখন আমরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলাম। সেদিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারা দেশের ছাত্রসমাজ রাস্তায় নেমে এসেছিল। আজকে ফারহান ফাইয়াজের শহীদ দিবস। এদিন বহু মানুষ সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগের বাহিনীর হাতে শহীদ হয়েছিল।


তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতিশ্রুতি দিতে এসেছি। নারায়ণগঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী শহর। শ্রমিকদের জন্য নারায়ণগঞ্জ বিখ্যাত হলেও তাদের জন্য আমরা এখনো একটি সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে পারিনি। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের সুরক্ষা দিতে হবে। অথচ আমরা দেখছি, মাফিয়া অলিগার্কদের প্রোটেকশন দেওয়া হচ্ছে, আর ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজদের কারণে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারছেন না।


এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আপনারা একসময় গণঅভ্যুত্থানে জেগে উঠেছিলেন, এখনো আপনাদের সেভাবে জেগে থাকতে হবে। এ যুদ্ধ তখনই শেষ হবে, যখন আমরা নতুন বন্দোবস্ত, অর্থাৎ জনগণের জন্য সুষ্ঠু ও ন্যায্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী প্রমুখ।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত পরশু আমাদের ওপর হামলা হয়েছিল। যারা এই হামলার পক্ষে কথা বলছেন, আওয়ামী লীগের ডেডলিস্টে তারা নেই। আওয়ামী লীগ বলে, তারা ফিরলে তাদের নিয়ে বাংলাদেশ গড়বে। আওয়ামী লীগের ডেডলিস্টে আছি আমরা। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপনাদের ব্যবসাপাতি ছিলো, আপনাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী কারও কারও মেয়ের জামাই। কিন্তু আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন আমাদের মৃত্যু ডেকে আনবে। আপনি যেভাবে সুশীলতা দেখাতে পারেন, আমি হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগের সাথে সুশীলতা দেখাবো না।  

 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে। গোপালগঞ্জের ঘটনার পর আওয়ামী লীগের তওবার সুযোগও নেই। মনে রাখতে হবে, কেয়ামতের পরে তওবা কাজে লাগে না। আওয়ামী লীগ যদি ফিরে, তার পরিণতি কি হবে তা আপনারা গোপালগঞ্জে দেখেছেন। যেই বুদ্ধিজীবীরা পয়সার জন্য হাসিনার সময় মগজ বিক্রি করেছিলো, যারা কলম বিক্রি করেছিলো, যারা জিহবা এই গণহত্যার পক্ষে কথা বলেছে, তারা হচ্ছে জ্ঞানপাপী। এদের দিয়ে বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। আমরা বাংলাদেশ উইদআউট আওয়ামী লীগ গঠন করা শুরু করেছি।


সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশি রাজনৈতিক দল না। আওয়ামী লীগ ভারতীয় দল। এ কারণেই তারা বলে ভারতকে যা দিয়েছি ভারত সেটা আজীবন মনে রাখবে। আমরা বলি শুধু তোমাদের জীবদ্দশায় নয় তোমাদের পরবর্তী প্রজন্ম যদি ভারতের সেবাদাসত্ব বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশের মানুষ মেনে নিবে না। আওয়ামী লীগের প্রতিবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সেবাদাস জাতীয় পার্টি ১৪ দল। তারা বাংলাদেশে মানুষের সঙ্গে গাদ্দারি করে গণতন্ত্রকে হত্যা করে আওয়ামী লীগের ডামি নির্বাচনগুলো বৈধতা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সকল দোসরকে অবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে। আওয়ামী লীগ অস্তিমজ্জায় সন্ত্রাসী সংগঠন। তাদের মধ্যে ভালো নেতা খুঁজতে গেলে আওয়ামী লীগ উজাড় হয়ে যাবে।


তিনি বলেন, একটা দুইটা জায়গায় সন্ত্রাসী হামলা করে আমাদেরকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমাদের ভাইয়েরা আমাদের সামনে জীবন দিয়েছে আর শপথ নিয়েছি এই বাংলাদেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে কখনও ফিরে আসতে দিবো না। আওয়ামী লীগকে ফেরানোর জন্য ভারতীয় শক্তিগুলো একযুগে মাঠে নেমেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিয়ে তারা আমাদের হুমকি দেখাতে চায়।


তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ শান্তিপ্রিয় মানুষ। এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের ফাউল খেলায় যোগ দিতে চায় নাই। ১৪ ও ১৮ এর নির্বাচনে এদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে দেখয়িছে তোমাদের ফাউল তোমরাই বিতাড়িত হয়ে যাবে। কুখ্যাত শামীম ওসমান বলেছিলো, ওরা আমাদের সাথে বন্ধুকের খেলা খেলবে, সন্ত্রাসীর খেলা খেলবে। আর আমাদের শহীদ ভাইয়েরা বুকের তাজা রক্ত রাজপথে ঢেলে দিয়ে আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশ থেকে উৎখাত করেছে।