জহির শাহ্, জেলা প্রতিনিধি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রেম, পারিবারিক চাপ ও মানসিক দ্বন্দ্বের মাঝপথে আরেক তরুণের জীবন থেমে গেল।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পূর্ব মেড্ডার ফয়সাল আহমেদ (২৫), সোমবার (২ জুলাই) রাতে তার নিজ ঘরে আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুর আগে দেওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস ইতোমধ্যে আলোড়ন তুলেছে।
✦ স্ট্যাটাসে ব্যক্তিগত অনুভব
মৃত্যুর আগে ফয়সাল নিজের ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন
> ❝আমি আমার রবের কাছে একটাই চাওয়া, সেটা হল তুমি... এই দুনিয়াতে একসঙ্গে থাকার ইচ্ছাটা অনেক দু’জনের। কিন্তু দু’জনের পরিবারের মানুষগুলা বুঝলো না... তুমি আমার মুক্তা।❞
এই স্ট্যাটাসে সম্পর্ক, সামাজিক চাপ এবং মানসিক টানাপোড়েনের আভাস পাওয়া যায়। তাঁর কাছের বন্ধু ও পরিবারের লোকজনের মতে, একটি সম্পর্ক ছিল—যেটি সামাজিক সম্মতিতে বাঁধা পড়েনি।
✦ ঘর থেকে কী পাওয়া গেছে?
☑ ফয়সালের ঘরে পাওয়া গেছে একটি চিঠি, যেখানে কিছু আবেগঘন বার্তা লেখা ছিল বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
☑ বন্ধুরা জানান, তিনি বিগত এক বছর ধরে মানসিকভাবে চাপে ছিলেন এবং সম্পর্কজনিত বিষয়ে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করতেন।
✦ প্রশাসনের বক্তব্য
সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মোজাফফর হোসেন বলেন:
> “প্রাথমিকভাবে আমরা এটি প্রেমঘটিত হতাশাজনিত আত্মহত্যা বলেই মনে করছি। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।”
✦ আমাদের করণীয় কী?
এই ঘটনা কোনো একক ব্যক্তি, পরিবার বা সমাজকে অভিযুক্ত করার জন্য নয়। বরং এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়—
তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য ও আবেগের প্রতি পরিবারের আরও মনোযোগী হওয়া দরকার।
ভালোবাসা ও সম্পর্ক—এগুলোকে শুধুই নিয়ন্ত্রণ নয়, বোঝাপড়ার মাধ্যমে পরিচালনা করা জরুরি।
আত্মহত্যা কখনোই কোনো সমাধান হতে পারে না।
✆শেষকথা : সহায়তা নিন, নির্ভরতা গড়ুন
যদি আপনি কিংবা আপনার পরিচিত কেউ মানসিক চাপে ভোগেন—
তাহলে দয়া করে কাউকে বিশ্বাস করুন, কথা বলুন।
📞 বাংলাদেশ মনোরোগ সোসাইটি হেল্পলাইন: ১৬২৬৩ (২৪ ঘণ্টা চালু)
✪ কাউন্সেলিং, চিকিৎসা ও সহানুভূতিশীল সংলাপ—একটি জীবন বাঁচাতে পারে।
প্রেম ও পারিবারিক সংস্কৃতির মাঝে ভারসাম্য গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি।
এই ঘটনাটি যেন আমাদের নতুন করে ভাবতে শেখায়—একটি জীবন বাঁচাতে হলে শুধু চিকিৎসা নয়, প্রয়োজন সহানুভূতি, শ্রবণশীলতা এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সম্মান।
> ❝প্রেম থাকুক হৃদয়ে, কিন্তু জীবন যেন কখনো প্রেমহীন সমাজের কাছে হেরে না যায়।❞