চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানাধীন রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরা করে গুমের চেষ্টা চালানো পাষণ্ড স্বামী সুমনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর থানার ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে ৯ জুলাই রাতে চট্টগ্রামের পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ভাড়াবাসায় এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ধারালো অস্ত্র দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার পর তার লাশ বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখে ঘাতক সুমন। পরে বাড়ির সিকিউরিটি গার্ড মশিউর রহমান দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক শব্দ শুনে বাসায় গেলে সুমন তাকে ঢুকতে বাধা দেয়। সন্দেহ হলে মশিউর জোর করে বাসায় ঢুকে রক্তের দাগ ও বাথরুমে রক্তমাখা কাপড় দেখতে পান। তখন স্থানীয়দের খবর দিতে গেলে সুমন বাসার গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যান।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, ঘটনার পর সুমন সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকায় পালিয়ে বেড়ায়। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর সে বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আত্মহত্যার নাটক সাজানোর চেষ্টা করলেও, তদন্তে পরকীয়ার জেরে হত্যাকাণ্ডের প্রমাণ মেলে।
র্যাব জানায়, হত্যার আগে সুমন তার একমাত্র সন্তানকে আত্মীয়ের বাসায় পাঠিয়ে দেন। পরে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ১১ টুকরো করেন। মাথা ও দুই হাত ফ্রিজে রেখেছিলেন তিনি, বাকি অংশগুলো ফ্ল্যাটের বিভিন্ন জায়গায় ও কমোডে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
সিকিউরিটি গার্ড ও স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বায়েজিদ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে। নিহতের বড় ভাই মো. আনোয়ার হোসেন রুবেল বাদী হয়ে বায়েজিদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানায়, ১০ বছর আগে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক তাদের বিয়ে হয়। বিদেশ থেকে ফেরার পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলছিল। ঘটনার রাতে বাসায় কয়েকজন যুবকের আসাকে কেন্দ্র করে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে স্ত্রীকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন সুমন।
র্যাব-৭, র্যাব সদর দপ্তর এবং র্যাব-৯ সিলেটের যৌথ অভিযানে মাত্র ৪২ ঘণ্টার মধ্যেই এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।