দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Friday, 18 July 2025

গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ


জহির শাহ্ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে

রাজপথে ফিরে এলো নাগরিক গর্জন: গোপালগঞ্জে হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল সন্ধ্যায় দেখা গেল রাজপথে এক ভিন্ন চিত্র—দলে দলে মানুষ, পোস্টারে লেখা প্রতিবাদের ভাষ্য, মুখে জ্বলে ওঠা ক্ষোভের স্লোগান। গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এনসিপির নেতাকর্মীরা আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ যেন হয়ে উঠেছিল রাজনীতির শীতল রক্তপ্রবাহে এক জেগে ওঠা দাবানলের মতো। 


ট্যাঙ্কেরপাড় থেকে শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে এসে থামে এই বিক্ষোভ, যেখানে ছাত্র, যুব, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের কণ্ঠে উঠে আসে রাষ্ট্রের বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর বিরুদ্ধে এক অনঢ় প্রতিরোধের ভাষা। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় ট্যাঙ্কেরপাড়ে জড়ো হন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এনসিপির নেতৃবৃন্দ, জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী, অধিকারকামী সাধারণ মানুষ ও তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিরা। মিছিল ঘুরে বেড়ায় পুরাতন জেল রোড, কুমারশীল মোড়, হাসপাতাল রোড, মঠের গোড়া, ঘোড়াপট্টি, টিএ রোড, কালীবাড়ি মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে গর্জে ওঠে বক্তৃতার ভাষায়।


সমাবেশে একে একে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা এনসিপির সমন্বয়কারী ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান (লিটন), যুগ্ম সমন্বয়কারী এস এ মহিউদ্দিন, কওমি প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন, এনসিপির আশুগঞ্জ উপজেলা শাখার প্রতিনিধি জয়ন্তী বিশ্বাস, ছাত্রসংসদের মোহাইমিনুল আজবীন এবং আবু বক্কর সানি। বক্তৃতায় উঠে আসে এক কঠিন প্রশ্ন—“একটা রাজনৈতিক দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা হলে, তার জবাব কোথায়? কারা এই হামলা চালালো? রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ভূমিকাই বা কী?” তাঁরা একযোগে দাবি তোলেন—২৪ ঘণ্টার মধ্যে গোপালগঞ্জের হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। নইলে গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়বে এনসিপির সাংগঠনিক প্রতিরোধ।


সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী জিহান মাহমুদ, যার কণ্ঠে ছিল ঠান্ডা মাথার নেতৃত্ব আর সংগঠনের স্পষ্ট বার্তা: “আমরা কাউকে ভয় পাই না। গণতন্ত্র চাই, সম্মান চাই, এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উঁচিয়ে দাঁড়ানোর অধিকার চাই।” বক্তৃতায় বক্তারা বারবার মনে করিয়ে দেন—গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে ভিন্নমত থাকা স্বাভাবিক, কিন্তু তার জবাবে হামলা, দমন-পীড়ন বা অপপ্রচার চালানো এক ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, যা তারা কোনোভাবেই মেনে নেবেন না।


এই বিক্ষোভ শুধু তাৎক্ষণিক কোনো রাজনৈতিক ইস্যুর প্রতিক্রিয়া নয়—এ যেন গোটা দেশের রাজনৈতিক সংকোচনের বিরুদ্ধে এক স্বতঃস্ফূর্ত, শক্তিশালী প্রতিবাদ। এখানে কেউ কাঁদছিল না, কেউ ভেঙে পড়েনি—বরং চোখে ছিল প্রতিজ্ঞার দীপ্তি, মুখে ছিল ন্যায়ের ভাষা, আর শরীরে ছিল আন্দোলনের প্রস্তুতি। এই সমাবেশ প্রমাণ করে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এখনো জনতার মেরুদণ্ড ভেঙে ফেলা যায়নি। রাজপথে যখন ফের প্রতিবাদ ফিরে আসে, তখন ইতিহাস বলে—পরিবর্তন আর খুব দূরে নয়।