দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। রাতের অন্ধকারে অপহরণ, দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে যুবককে নৃশংস হত্যা! - Durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Saturday, September 20, 2025

রাতের অন্ধকারে অপহরণ, দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে যুবককে নৃশংস হত্যা!


জহির শাহ্, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের আতুকোড়া গ্রামে রাতের গভীর আঁধারে এক যুবককে অপহরণ করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মোঃ রহমান মিয়া (৩০), ওই গ্রামের মোঃ শফিক মিয়ার একমাত্র ছেলে। তার বাড়ির দরজা ভেঙে ঢুকে তাকে টেনে নিয়ে যাওয়া, তারপর রাস্তার ধারে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক আঘাত—এই রক্তাক্ত দৃশ্য কল্পনা করলেই শরীর কাঁপে। কেন এই নিরীহ যুবক? কী ছিল দুর্বৃত্তদের উদ্দেশ্য? এসব প্রশ্ন আজ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গেঁথে আছে, যেন একটা অদৃশ্য আগুন জ্বলছে সকলের বুকের মধ্যে।



স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাটি ঘটে। রহমান মিয়া তার ছোট্ট ঘরে শুয়ে ছিলেন, পরিবারের সঙ্গে স্বপ্ন দেখছিলেন হয়তো—কালকের কাজকর্ম, পরিবারের ভালোবাসা। হঠাৎ দরজায় জোরালো আঘাত, অচেনা ছায়ারা ঢুকে পড়ে। চিৎকার করার সময়ও দেয় না, তাকে তুলে নিয়ে যায়। কয়েক মিনিট পরই রাস্তার পাশে তার দেহ পড়ে থাকে, রক্তে ভেজা। দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে তার শরীর ছিন্নভিন্ন, মুখে শেষ হাসিটুকু জমে থাকে। এই গ্রামে, যেখানে রাতের নীরবতা ছিল শান্তির প্রতীক, আজ সেই নীরবতা হয়েছে ভয়ের সঙ্গী। নাসিরনগরের এরকম নৃশংস ঘটনা ঘটেছে,যা প্রমাণ করে, দুর্নীতি আর অপরাধের জাল এখানে গভীরভাবে ছড়িয়ে পড়ছে—কিন্তু কখন শেষ হবে এই চক্র?



এই হত্যাকাণ্ড শুধু একটা পরিবারের শোক নয়, সমগ্র সমাজের ক্ষত। গ্রামবাসীরা বলছেন, “রহমান ছিল আমাদের ছেলে, ভাই—সে কোনো অপরাধ করেনি, শুধু বেঁচে থাকার চেষ্টা করছিল। এমন নৃশংসতা কীভাবে মেনে নেব? আমরা ভয় পাব না, কিন্তু আমাদের সন্তানদের ভয়ে রাত কাটাতে হবে কেন?” চাঞ্চল্য আর ক্ষোভের ঢেউ উঠেছে চারদিকে। মহিলারা কাঁদছেন, যুবকরা রাস্তায় নেমে এসেছে—এটা শুধু শোকের সমাবেশ নয়, একটা বিদ্রোহের সূচনা। কারণ, যখন নিরীহ মানুষের জীবন এমন সস্তা হয়ে যায়, তখন প্রশ্ন ওঠে: আমাদের আইন কোথায়? আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?



এলাকাবাসী নাসিরনগর উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দ্রুত, নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। জড়িতদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে—অন্যথায়, আরও রক্তপাত হবে। গ্রামের সাধারণ মানুষের জানমাল রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, যাতে রাতের আঁধার আর ভয়ের প্রতীক না হয়ে যায়। নিহত রহমান মিয়ার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন সবাই, আর শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। কিন্তু এই সমবেদনা যেন শুধু কথায় না থেকে হয় ন্যায়ের অস্ত্র—কারণ, যদি আজ রহমানের জন্য না লড়াই করি, কাল কারোর জন্য লড়বে কে? এই হত্যা শুধু একটা খবর নয়, একটা চিৎকার—সমাজের বিবেক জাগানোর চিৎকার।