জহির শাহ্ , ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার সিংগারবিল ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী দৌলতবাড়ি চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রশস্ত অঙ্গনে ৮ সেপ্টেম্বর, সোমবার, উৎসবমুখর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে সূচনা হলো রূপসী বাংলা টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের উদ্যোগে আয়োজিত ব্যতিক্রমী দর্জি বিজ্ঞানের বিশেষ কারিগরি প্রশিক্ষণ কর্মশালার। এটি একদিকে তরুণদের হাতে দক্ষতার অমূল্য আলো জ্বালাবে, অন্যদিকে বেকারত্ব দূরীকরণে কার্যকর অবদান রেখে তাদের জীবনে সমৃদ্ধির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রাবন্ধিক জহির শাহ্।
তিনি তাঁর প্রাণবন্ত বক্তৃতায় শিক্ষা ও কারিগরি দক্ষতার সমন্বিত শক্তিকে জাতির অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি আখ্যা দিয়ে বলেন, “দক্ষতা হলো স্বাধীনতা ও স্বনির্ভরতার অপরাজেয় অস্ত্র, যা একটি প্রজন্মকে শুধু কর্মসংস্থানের পথেই নয়, আত্মবিশ্বাসের সোপানেও পৌঁছে দেয়।” অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানের দূরদর্শী সুপারিনটেনডেন্ট মুফতি সুফি আমীর হোসেইন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেন যে, তাদের লক্ষ্য কেবল পাঠ্যজ্ঞান বিতরণ নয়, বরং শিক্ষার্থীদের জীবনমুখী দক্ষতায় সজ্জিত করে আত্মনির্ভরশীল সমাজ গড়ে তোলা।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মেয়ে শিক্ষার্থী আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “দক্ষতা এমন এক শক্তি, যা আমাদের জীবন বদলাবে, সমাজকে আলোকিত করবে, আর জাতির ভাগ্য গঠনে ভূমিকা রাখবে।” অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এস.এম. নাজির হোসেন রনি। তিনি প্রথম দিন শতাধিক শিক্ষার্থীকে পোশাক কাটিং, সেলাই ও কাপড় ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক শিক্ষা দিয়ে তাদের মধ্যে আশা, আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণার আলো জ্বালান।
উল্লেখযোগ্য যে, টানা দুই মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণে শিক্ষার্থীরা ৪৬ প্রকার ভিন্নধর্মী পোশাকের নকশা, কারুকাজ ও আধুনিক সেলাইকলার কৌশল আয়ত্ত করবে। এটি শুধু কর্মসংস্থানের নয়, বরং আর্থিক স্বাধীনতার হাতিয়ার হয়ে উঠবে। প্রশিক্ষণ শেষে মেধার ভিত্তিতে সার্টিফিকেট প্রদানের ঘোষণায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন উৎসাহ ও প্রতিশ্রুতির জন্ম দিয়েছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এই উদ্যোগকে অভিহিত করেছেন এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে, যা কেবল একটি প্রশিক্ষণ নয়, বরং বেকারত্ব দূরীকরণ, আত্মবিশ্বাস সঞ্চার ও সামাজিক পরিবর্তনের অগ্রযাত্রা।
এটি যেন এক আলোকিত গল্প, যা তরুণদের হাতে গড়ে তুলবে সমৃদ্ধ জীবনের স্বপ্নময় মানচিত্র এবং সমাজে ইতিবাচক রূপান্তরের এক অনন্য অধ্যায়।