দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। ফিফার বিরুদ্ধে ফুটবলারদের জয়, পেয়েছে ছুটির নিশ্চয়তা - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

Sunday, 13 July 2025

ফিফার বিরুদ্ধে ফুটবলারদের জয়, পেয়েছে ছুটির নিশ্চয়তা


খেলা ডেস্ক :

টানা খেলার শারীরিক ও মানসিক ধকল থেকে অবশেষে মুক্তি মিলতে যাচ্ছে ফুটবলারদের। এখন থেকে দুটি ফুটবল ম্যাচের মধ্যে ন্যূনতম ৭২ ঘণ্টার বিরতি এবং দুই মৌসুমের মাঝে তিন সপ্তাহের ছুটি পাবেন তাঁরা। এ বিষয়ে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা ও খেলোয়াড়দের ইউনিয়নগুলোর মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে।


গতকাল শনিবার নিউইয়র্কে ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে সমঝোতার খবর নিশ্চিত করেছে ফিফা। এ ছাড়া ফিফা কাউন্সিলের বৈঠকে খেলোয়াড়দের বিষয়ে আলোচনার সময় প্রতিনিধি সংগঠনের উপস্থিতির প্রস্তাবও সংস্থাটি বিবেচনা করবে।


ফুটবলের প্রচলিত ধারা হচ্ছে, খেলোয়াড়েরা সারা বছর ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকেন। সাধারণত প্রতিটি দেশের ফুটবল লিগ ৯ থেকে ১০ মাস ধরে চলে। এর বাইরে আছে মহাদেশীয়, আঞ্চলিক টুর্নামেন্ট। ক্লাব ফুটবলের মৌসুমের মধ্যেই চলে আন্তর্জাতিক ফুটবল। ফিফা প্রতিবছর আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য ১০–১২ দিনের ৫–৬টি উইন্ডো করে, যখন শুধু আন্তর্জাতিক ফুটবল হয়ে থাকে। এ কারণে দেখা যায়, বছরের প্রায় পুরোটা জুড়েই খেলার মধ্যে থাকতে হয় ফুটবলারদের।


ফুটবল মৌসুম মে–জুনের মধ্যে শেষ হয়ে আবার শুরু হয় আগস্টে। তার আগে জুলাইয়ে শুরু হয় নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি। এ কারণে ফুটবলারদের ছুটি কাটানোর জন্য সময় বলতে জুনের মাঝামাঝি থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি এক মাস। কিন্তু দুই মৌসুমের মাঝের এই অবকাশও এখন ‘নাই’ হয়ে গেছে।


কোনো বছর ফিফা বিশ্বকাপ, কোনো বছর মহাদেশীয় চ্যাম্পিয়নশিপ। চলতি বছর নতুন করে শুরু হয়েছে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। অর্থাৎ পরিস্থিতি যা দাঁড়াচ্ছে—সারা বছরে ফুটবলারদের কোনো ছুটি নেই! আর বেশি বেশি টুর্নামেন্ট ও ম্যাচ খেলার কারণে তিন দিনের মধ্যে দুই ম্যাচও খেলতে হয় কাউকে কাউকে। এসব নিয়ে গত কয়েক মৌসুম ধরে আপত্তি জানিয়ে আসছেন ফুটবলাররা। খেলোয়াড়দের চোটের প্রবণতা বাড়ছে বলে অনেক ক্লাব কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে বিরক্ত।


বিভিন্ন মাধ্যমে অনেক দিন ধরে আলোচিত হওয়া এসব বিষয় নিয়েই ফিফা সভাপতির সঙ্গে বসেছিলেন ফুটবলারদের বৈশ্বিক সংগঠনের কর্মকর্তারা। সভা শেষে বৈঠকের কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সভায় খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত (পুরুষ ও নারী উভয়) মূল বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যা একটি শীর্ষ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। কারণ, এটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পেশাগত ঝুঁকি প্রতিরোধ কাঠামোর অংশ।’


খেলোয়াড়দের ইউনিয়নগুলোর সঙ্গে বৈঠকের ফল কী এসেছে, সেটা জানিয়ে লেখা হয়েছে, ‘এতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে ম্যাচগুলোর মধ্যে অন্তত ৭২ ঘণ্টা বিশ্রাম বাধ্যতামূলক থাকা উচিত এবং প্রত্যেক মৌসুম শেষে খেলোয়াড়দের জন্য কমপক্ষে ২১ দিনের একটি বিশ্রাম বা ছুটির ব্যবস্থা থাকতে হবে।’


এই ছুটি ও দুটির ম্যাচের মধ্যে বিরতির বিষয়টি ক্লাব এবং সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়েরা নিজেদের মতো করে ব্যবস্থাপনা করবেন। এ ছাড়া প্রতি সপ্তাহে একটি দিন ছুটি হিসেবে নির্ধারণের বিষয়টিও বিবেচনা করার কথা বলা হয়েছে।


গত বছরের জুনে ফুটবলারদের বৈশ্বিক সংগঠন ফিফপ্রো এবং ইংল্যান্ড ও ফ্রান্সের খেলোয়াড় ইউনিয়নগুলো ফিফার বিরুদ্ধে একটি মামলা করে। যেখানে অভিযোগ করা হয়, ফিফা তার প্রভাবশালী অবস্থানকে অপব্যবহার করে ফিফা বিশ্বকাপ সম্প্রসারণ (৩২ থেকে বাড়িয়ে ৪৮ দল) এবং ক্লাব বিশ্বকাপ (৭ দল থেকে বাড়িয়ে ৩২) চালুর মাধ্যমে তাদের সূচি বাড়িয়েছে, যা ইউরোপীয় প্রতিযোগিতা আইন লঙ্ঘন করেছে।


চলমান ক্লাব বিশ্বকাপের আগে ফিফপ্রো প্রতি মৌসুম শেষে বাধ্যতামূলক চার সপ্তাহের বিরতির দাবি জানায়। সেটাই এখন তিন সপ্তাহ এবং দুটি ম্যাচের মধ্যে ৭২ ঘণ্টার বিশ্রামের সমঝোতায় এসে পৌঁছেছে।