দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। চট্টগ্রামের চাকমা রুবেল গ্রুপের ৭ সদস্য আটক, ভয়ঙ্কর সব কাহিনী - Durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Sunday, February 19, 2023

চট্টগ্রামের চাকমা রুবেল গ্রুপের ৭ সদস্য আটক, ভয়ঙ্কর সব কাহিনী

চট্টগ্রাম প্রতিবেদক :

রুদ্ধশ্বাস এক অভিযানে সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে এই ডাকাতচক্রের দলনেতাসহ সাত দুর্ধর্ষ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম কোতোয়ালী থানা পুলিশের একটি টিম।

চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা ছাড়াও ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের সীতাকুণ্ড, ফৌজদারহাটসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের মইজ্জারটেক, পটিয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাই চালিয়ে আসছিল একটি চক্রটি। এদের প্রত্যেকেই দাগি আসামি। প্রত্যেকের নামেই চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন থানায় আগে থেকেই রয়েছে একাধিক মামলা।

চট্টগ্রাম নগরীতে ১২ ঘন্টার ব্যবধানে দুবার সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে রাস্তায় নামে তারা- দিনের শুরুতে ভোরবেলায় অফিসগামী যাত্রী আর মধ্যরাতে ঘরমুখী মানুষ। কৌশলও তাদের একই। টার্গেট করা বাসে ৮-৯ জনের দল যাত্রী সেজে ওঠে পড়ে। চলন্ত বাসে এরপরই অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় যাত্রীদের সর্বস্ব। কাজ শেষে নির্বিঘ্নে সুযোগমতো নিরাপদ জায়গায় নেমে পড়ে। এ সময় পুলিশের তৎপরতাও থাকে কম। ঠিক এই সুযোগটাই নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরীর সড়কে চলাচলরত বাসে যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নিচ্ছিল ভয়ানক এক ডাকাতচক্র।

পুলিশ সূত্র থেকে জানা গেছে, সোমবার রাত ১০টার দিকে কোতোয়ালী থানার এসআই মেহেদী হাসান তার টিম নিয়ে নগরীর পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় নিয়মিত দায়িত্বপালনকালে গোপনে খবর পান পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পাকা রাস্তার ওপর অজ্ঞাত কয়েকজনের গতিবিধি খুবই সন্দেহজনক। খবর পেয়ে তিনি ও তার টিম ওই এলাকায় অবস্থান নেন।

গুপ্তচরের দেওয়া তথ্যমতে, সেখানে অন্তত ১০ জনের অবস্থান শনাক্ত করে পুলিশের টিমটি। ওরা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য— এমন লক্ষণ নিশ্চিত হতেই দ্রুত অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু পুলিশের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই দুই থেকে তিনজন ছিনতাইকারী মুহুর্তের মধ্যে পালিয়ে যায়। তবে কোতোয়ালী পুলিশের টিমটি ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা মোহাম্মদ রুবেল ওরফে চাকমা রুবেলসহ সাতজনকে ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭টি টিপ ছোরাও উদ্ধার করা হয়।

এসআই মেহেদীর নেতৃত্বে এই অভিযানে অংশ নেন কোতোয়ালী থানার এসআই মোমিনুল হাসান, মিজানুর রহমান চৌধুরী, খায়রুল বাসার সাজিদ ও সুলভ বিশ্বাস এবং এএসআই সাইফুল আলম ও রনেশ বড়ুয়া।

পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ধর্ষ ওই ছিনতাইকারীদের দলনেতা ৩২ বছর বয়সী চাকমা রুবেল নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জের রং মেলা বাজারের বাদশা মিয়ার পুত্র। বর্তমানে তিনি থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাটের উত্তর নালাপাড়ার ২০ নম্বর গলিতে। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী, সদরঘাট ও ডবলমুরিং থানায় অস্ত্র আইনে সহ বিভিন্ন আইনে মোট ১৫টি মামলা আছে।

গ্রেপ্তার হওয়া অন্য ছিনতাইকারীদের মধ্যে মোহাম্মদ আলামিনের (৩০) বাড়ি কুমিল্লা মুরাদনগরের ছালিয়াকান্দিতে। বর্তমানে তার বাসা চট্টগ্রাম নগরীর ব্রিজঘাট খোয়াইজ নগরে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানা ও কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানায় ২টি মামলা আছে। ছিনতাইকারী রমজান হোসেন রুবেল (৩২) পটিয়ার দাইয়াপাড়ার সৈয়দ আহম্মেদের ছেলে। বর্তমানে তিনি থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর উত্তর নালাপাড়ার বাচুনির মায়ের কলোনিতে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী এবং সদরঘাট থানায় মোট ৮টি মামলা আছে। শাহাদাৎ হোসেন বাবুর (৩০) বাড়ি চাঁদপুর শাহরাস্তির নোয়াবাড়ি এলাকায়। রুবেলের মতো তার বাসাও উত্তর নালাপাড়ার বাচুনির মায়ের কলোনিতে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী এবং চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানায় মোট ৩টি মামলা আছে।

ছিনতাইকারী দলের সদস্য মোহাম্মদ বাদশাহ (২৮) পটিয়ার কোলাগাঁওয়ের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের এমদাদ মিয়ার বাড়ির জাফরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা আছে। ৩১ বছর বয়সী আরেক ছিনতাইকারী দীন ইসলাম প্রকাশ মুন্নার বাড়ি কুমিল্লার বাঙ্গুরা বাজারে। বর্তমানে তিনি থাকেন চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ নালাপাড়ার আল ইসলাম ভবনের তৃতীয় তলায়। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় ২টি মামলা আছে। অপর ছিনতাইকারী মনির হোসেন (৩৮) কুমিল্লার তিতাসের কড়ইকান্দি মধ্যপাড়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। রুবেল ও বাবুর মতো মনিরও উত্তর নালাপাড়ার বাচুনির মায়ের কলোনিতে। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী ও ডবলমুরিং থানায় অস্ত্র আইন ও দন্ডবিধি আইনে ২টি করে মোট ৪টি মামলা আছে।

কোতোয়ালী থানার এসআই মেহেদী হাসান চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘গভীর রাতের বাসগুলোতে ঘরমুখী যাত্রী এবং ভোরবেলায় চলাচলরত বাসগুলোতে অফিসগামী যাত্রীদের টার্গেট করে এই ছিনতাইকারীরা। গভীর রাত এবং ভোরবেলায় বাসে যাত্রী কম থাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জায়গা বুঝে ছোরার ভয়ভীতি দেখিয়ে সর্বস্ব লুটে নেয়।’

তিনি জানান, ‘গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীরা চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকাহ ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের সীতাকুণ্ড, ফৌজদারহাটসহ মইজ্জারটেক, পটিয়ায়ও ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে স্বীকার করেছে।’