তানজিলের সমাধিতে ফুল ও প্রার্থনায় আঁকা বীরত্বের প্রতিচ্ছবি
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের স্মরণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক ব্যতিক্রমী সকালের সাক্ষী হলো ইতিহাস, যখন ৫ আগস্ট সকালে বিটঘর গ্রামের শহীদ তানজিল মাহমুদ সুজয়সহ উপজেলার আরও চারজন শহীদের স্মৃতির প্রতি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন নবীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাজীব চৌধুরী, সাথে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আল মামুন, প্রেস ক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি এবং এলাকার বিশিষ্টজনেরা, যাঁরা সকলেই একত্রিত হয়ে বীরদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতির প্রতি তাঁদের আত্মত্যাগের ঋণ স্বীকার করেন।
এরপর উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়, আর ইউএনও নিজ হাতে শহীদ তানজিলের পরিবারের খোঁজখবর নেন ও সান্ত্বনার বার্তা দেন, যেন রাষ্ট্র তাঁদের পাশে আছে।
তানজিল, যিনি মাত্র ১৯ বছর বয়সে গাজীপুরের ভাওয়াল সরকারি কলেজের ছাত্র অবস্থায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে শহীদ হন এবং এরপর নির্মমভাবে তাঁর দেহ ভ্যানে তুলে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়, তিনি আজ শুধু বিটঘরের নয়, সমগ্র বাংলাদেশের জন্য এক প্রতিবাদী প্রতিচ্ছবি; এই আয়োজনে একইসঙ্গে শ্রদ্ধা জানানো হয় শহীদ রফিকুল ইসলাম, শহীদ কামরুল মিয়া, শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভীন এবং শহীদ মো. জাহিদ হোসেনের সমাধিতেও।
এই শ্রদ্ধাঞ্জলি কেবল আনুষ্ঠানিকতার গণ্ডি পেরিয়ে একটি প্রজন্ম-জাগানো বার্তা হয়ে দাঁড়ায়, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ইতিহাসে যারা রক্ত দিয়েছে, তাদের স্মরণ করাটাই আমাদের নৈতিক ও মানবিক দায়; জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ এক নতুন আলোর দিশারী, যা ভবিষ্যতের তরুণদের জাগিয়ে তুলবে আত্মত্যা