লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে স্ত্রীর অধিকার ও স্বীকৃতি পেতে পুলিশ সদস্যের বাড়িতে তিন দিন ধরে অনশন করছেন এক কলেজছাত্রী। গত রোববার থেকে উপজেলার তুষভাণ্ডার ইউনিয়নের দক্ষিণ ঘনেশ্যাম এলাকার পুলিশ সদস্য রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের বাড়িতে অনশন শুরু করেন ওই কলেজছাত্রী।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঘটনাস্থলে গেলে ভুক্তভোগী ওই কলেজছাত্রী বলেন, ২০২২ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন থানায় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে কনস্টেবল রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রী হিসেবে আমরা সাত দিন ধরে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করি। পরে সে বাসা ভাড়া নিয়ে আমাকে নিয়ে আসবে এমন আশ্বাসে আমাকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি আসার পরে দুই-তিন মাস সে আমার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে। এরপর ৫-৬ মাস যেতে না যেতেই - সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
তিনি বলেন, ওই সময় আমি তার অফিসে গিয়ে আমাকে তার বাসায় নেওয়ার জন্য চাপ দেই। তখন সে আবারও নানান টালবাহানা করে আমাকে রংপুরে আমার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এক বছর যেতে না যেতেই আমার সঙ্গে সে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে। এরপর তিনি আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করে আমার কাবিননামাসহ সকল ডকুমেন্ট গায়েব করে ফেলেন। তবে আমার ফোনে এবং আমার কাছে রক্ষিত ডকুমেন্ট আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে উপস্থাপন করলে - তারা আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়িতে তোলার জন্য বলে। কিন্তু, সে নানান অজুহাতে দিয়ে আমাকে বাড়িতে নিচ্ছে না এবং স্ত্রীর মর্যাদাও দিচ্ছে না। তাই আমি স্ত্রীর মর্যাদা অক্ষুণ্ন রাখতে তার বাড়িতে এসে অবস্থান করছি।
তুষভাণ্ডার ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রাকিবুল ইসলাম পলাশ এবং ওই পুলিশ সদস্যের প্রতিবেশীরা জানান, স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে রোববার বিকেলে রংপুরের একটি মেয়ে পুলিশ কনস্টেবল রাব্বি আল মামুনের বাড়িতে এসে অনশন শুরু করে। মেয়েটির নিরাপত্তার জন্য আমি পুলিশকে জানিয়ে ওই রাতে গ্রাম্য পুলিশ দিয়ে পাহারা দিয়েছি।
এ বিষয়ে পুলিশ সদস্য রাব্বি আল মামুন ওরফে ইশতিয়াক বুলবুলের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তার সঙ্গে আমার ফেসবুকে পরিচয়। এর বেশি কিছু তার সঙ্গে হয়নি। ওই মেয়ের সব অভিযোগ মিথ্যা। এসব বিষয় আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানে। এর আগে তদন্তও হয়েছে।
এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে কোনো পুলিশের ব্যক্তিগত বিষয়ে আমাদের পক্ষ থেকে হস্তক্ষেপ করা হয় না। তবে কেউ যদি কারো বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অভিযোগ করে এবং তা যদি যাচাই-বাছাই করে সঠিক প্রমাণিত হয়। ওই সময় আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।