দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। চর্বি আর কোলেস্টেরল নিঃশব্দে ধমনীর মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে! কীভাবে বুঝবেন আঁঠালো প্লাক জমেছে বুকে? - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Friday, 25 July 2025

চর্বি আর কোলেস্টেরল নিঃশব্দে ধমনীর মুখ বন্ধ করে দিচ্ছে! কীভাবে বুঝবেন আঁঠালো প্লাক জমেছে বুকে?


স্বাস্থ্য ডেস্ক :
কর্মব্যস্ত জীবন, অনিয়ন্ত্রিত খাওয়া-দাওয়া, মানসিক চাপ আর দৈহিক পরিশ্রমে অনীহা এই সবকিছুর যৌথ ফলাফল এক মারণব্যাধি। নাম সিএডি বা  করোনারি আর্টারি ডিজিজ।


কী এই অসুখ?
হার্টের থেকে সারা দেহে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে ধমনীর মাধ্যমে। এই ধমনীর ভিতরে যখন ধীরে ধীরে চর্বি জমে কিংবা কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য বর্জ্যপদার্থের আস্তরণ তৈরি হয় তখন তাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে প্লাক। হৃদযন্ত্রের নিজস্ব পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহকারী রক্তনালিগুলিকে বলে করোনারি আর্টারি। যখন এই ধমনীতে প্লাক জমে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখনই জন্ম নেয় এই রোগ। সময়মতো ধরা না পড়লে তা ডেকে আনতে পারে অ্যাঞ্জিনা, হার্ট অ্যাটাক, এমনকি মৃত্যু। কিন্তু এই প্লাক জমার প্রাথমিক উপসর্গগুলি এতটাই সূক্ষ্ম যে রোগী বুঝতেই পারেন না কখন বিপদ দরজায় কড়া নাড়ছে!


কীভাবে বুঝবেন, ধমনিতে জমছে প্লাক?
এই রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি এতই মৃদু যে, অনেকেই সেগুলিকে সাধারণ গ্যাস বা ক্লান্তি বলে এড়িয়ে যান। কিন্তু সতর্ক না হলে সামান্য উপসর্গই ভবিষ্যতের বড় বিপদে রূপ নিতে পারে।
১. বুক ধড়ফড় বা চাপ অনুভব করা: হাঁটাচলা, সিঁড়ি ভাঙা বা মানসিক উত্তেজনার সময় বুকের মাঝখানে ভারী লাগা বা জ্বালাভাব হতে পারে। কখনও মনে হতে পারে বুকের মধ্যে কিছু একটা চেপে বসেছে।
২. ঘন ঘন হাঁপ ধরা: আগে যেটুকু পথ হাঁটতে কোনও সমস্যাই হত না, এখন সেইটুকু পথ পেরোতেই দম বেরিয়ে যাচ্ছে? সতর্ক হন। এটি হৃদযন্ত্রে ঠিকমতো রক্ত না পৌঁছনোর ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. ঘাড়, চোয়াল, কাঁধ বা হাতে ব্যথা ছড়ানো: একে ডাক্তারি পরিভাষায় বলে রেডিয়েটিং পেইন। অর্থাৎ ব্যথা যেন ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষত বাম হাতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া একটি এই রোগের একটি মূল লক্ষণ।
৪. ঘাম ও দুর্বলতা: কোনও কারণ ছাড়াই অতিরিক্ত ঘাম বা ক্লান্তিভাব আসছে বারবার? এ রকম লক্ষণকেও হালকাভাবে নিলে চলবে না। করোনারি আর্টারি ডিজিজ-এর লক্ষণ হতে পারে।
৫. বমিভাব ও পেট গুড়গুড়: অনেকেই জানেন না যে হার্টের সমস্যা থেকেও পেটে গোলমাল হতে পারে। বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডজনিত সমস্যার উপসর্গ হিসেবে পেটখারাপ, অরুচি বা বমিভাব দেখা যায়। প্রায়ই এই সমস্যাগুলি গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বলে ভুল করেন মানুষ।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
বেশি বয়সের পুরুষ ও মহিলারা অর্থাৎ যাঁদের বয়স ৫০ পেরিয়ে গিয়েছে, ডায়াবেটিস রোগী, উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলে ভোগা মানুষ, ধূমপানকারী, স্থূলকায় ব্যক্তি এবং যাঁদের পরিবারে কারও হৃদরোগের ইতিহাস আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি অনেক বেশি।



কী করণীয়?
১. নিয়মিত রক্তচাপ, রক্তে চিনি ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা
২. ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম, স্ট্রেস টেস্ট কিংবা অ্যাঞ্জিওগ্রাফি ইত্যাদি পরীক্ষা করানো

৩. ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান বন্ধ করা

৪. নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা

৫. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা


শেষ কথা
করোনারি আর্টারি ডিজিজ নিঃশব্দ ঘাতক। একবার হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলে বিপদ অনেকটাই বেড়ে যায়, তাই প্রতিরোধই হল আসল বাঁচার পথ। উপসর্গ বুঝে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া জরুরি।