জাতীয় ডেস্ক :
গল্পটা বাসি। মাঝে-মধ্যে চাঙ্গা হয়। আওয়াজ ওঠে। আবার থেমে যায়। এই মুহূর্তে আওয়াজ ভারী হচ্ছে। বলা হচ্ছে এবার নাকি কিছু একটা হবেই। এ নিয়ে টানটান উত্তেজনা। চায়ের টেবিলে ঝড় উঠছে। রাজনৈতিক অফিসগুলোতে নানা সমীকরণ।
গুঞ্জন তো আছেই। সবকিছু ছাপিয়ে নিউজরুমেও গুঞ্জন ডালপালা মেলেছে। এতসব কিছু হচ্ছে- প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে। তার ভাগ্যে কী ঘটছে? বলা হচ্ছে তাকে সরিয়ে অন্য কাউকে বেছে নেয়া হতে পারে। বিকল্প নামটাও চাউর হয়ে আছে। এই বিকল্প নামটি বহুল পরিচিত। আসলে কি কিছু হচ্ছে? নির্বাচন সামনে।
এই মুহূর্তে প্রফেসর ইউনূস কেন এত বড় ঝুঁকি নেবেন। সংবিধান কাটাছেঁড়া করতে হবে। সংবিধান রাখতে হলে পরিবর্তনটা বড় ঝুঁকিপূর্ণ। ড. ইউনূস নিজেই সংবিধান মোতাবেক শপথ নিয়েছেন। বোদ্ধারা এ বিষয়ে একমত যে, যদি প্রেসিডেন্টকে অসাংবিধানিকভাবে অপসারণ করা হয়, তাহলে সংকট বাড়বে বৈ কমবে না। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মুভ হলে তা কথাই নেই। প্রথমত, এ ইস্যুতে রাজনৈতিক মেরূকরণ বেড়ে যাবে। প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত এবং কার্যক্রমে অপ্রত্যাশিত স্থবিরতা দেখা দিবে। আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ বিশেষত: বিশ্ব মিডিয়া সমালোচনার খোরাক পাবে। তবে হ্যাঁ, যদি বিপ্লবী সরকার হতো তাহলে এ নিয়ে হয়তো কোনো প্রশ্নই উঠতো না।
প্রেসিডেন্টকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অলিখিত একটি বার্তাকে ঘিরে। বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে প্রেসিডেন্টের ছবি থাকলে তা নামিয়ে ফেলতে বার্তা দেয়া হয়েছে। ৫ই আগস্টের পর থেকেই প্রেসিডেন্টের ছবি নামানো শুরু হয়। সর্বশেষ ১৫ই আগস্ট লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ছবিটি নামানো হয়। বলা হচ্ছে, যেখানে সরকার প্রধানের ছবি নেই সেখানে প্রেসিডেন্টের ছবি থাকার দরকার কী? সরকার এমন যুক্তি দিলেও সমালোচকরা নানা প্রশ্ন জারি রেখেছেন।
তারা বলছেন, এক বছর পর কেন এমন নির্দেশনা দিতে হচ্ছে। সূত্রের দাবি, প্রেসিডেন্ট মেডিকেল চেকআপের জন্য বিদেশ যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু তিনি সবুজ সংকেত পাননি। কারণ এই মুহূর্তে তার অনুপস্থিতি সাংবিধানিক সংকট তৈরি করতে পারে। তিনি বিদেশে গেলে স্পিকার দায়িত্ব পালন করার কথা। কিন্তু স্পিকার তো আগেই পদ ছেড়ে দিয়েছেন। ডেপুটি স্পিকার কারাগারে। বিকল্প আছেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু তার দায়িত্ব নেয়ার ক্ষেত্রেও দীর্ঘ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনকে সরাতে অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়ারা আগে থেকেই চেষ্টা করে আসছেন। তাদের এই প্রচেষ্টা এখনো থেমে নেই। বঙ্গভবন ঘিরে কর্মসূচিও হয়েছে।
কিন্তু বড় দলগুলো বিষয়টি আঁচ করতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে দেয়নি। সামনে দলগুলোর এই অবস্থান প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের থাকা না থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে অন্তরালে নানা তৎপরতা চলছে। প্রেসিডেন্ট ইস্যু এই তৎপরতার অংশ কিনা কে জানে।