জহির ভূইয়া :
বিপিএল মেগা ফাইনালের আগে জেমস মাতিয়ে রেখে গেছেন। এরপর মাঠে টস করতে নেমে হেরে ব্যাট করতে নামা সিলেট গানের তালটা ব্যাটে-বলে ধরে রাখতে পারেনি। তবে ২০ ওভার ব্যাট করে সিলেট লড়াই করার মতো বড় পুঁজি ঠিকই কুমিল্লার বিপক্ষে স্কোর বোর্ডে জমা করে। কিন্তু তাতে কাজ হলো না। ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস, সেই পুরাতন প্রবাদ বাক্যটি আজ আবার প্রমান দিলেন সিলেটের শান্ত। জনসন ৯ রানে সেই ক্যাচ যদি হাতে রাখতে পারতেন তাহলে হয়তো প্রথম বার সিলেটের কপালে বিপিএল শিরোপাটা শোভা পেত। জনসনের কাছেই যেন হারল সিলেট। ৪ বল না খেলেই কুমিল্লা ৭ উইকেটে জয় দিয়ে সিলেটকে কাঁদিয়ে ফাইনাল জিতে নিল।
লিটন আর জনসনের জোড়া ফিফটিতে কুমিল্লা ৭ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে সিলেটকে হারিয়ে ৪র্থ বারের মতো বিপিএল শিরোপা ঘরে ুতলেছে। মধ্য রাতে মিরপুরে স্টেডিয়ামের ্আকাশে কাঁপিয়ে আতস বাঁজি আর মাঠে অন্ধকার করে লাইটিংয়ের সমাহার ছিল কেবলই কুমিল্লার উদযাপন। তখন সিলেটের ড্রেসিং রুমে ঘোর অন্ধকার। ম্যাজিশিয়ান মাশরাফির হাত ধরে সিলেটের বিপিএল স্ব্প্ন পূরণ হল না।
৪র্থ বার শিরোপা ঘরে তুলতে কুমিল্লার সামনে ছিল ১৭৬ রানের মিশণ। শিরেপার মিশণে নেমেই দলীয় ২৭ রানে কুমিল্লা ধাক্কা খেয়ে বসে সুনীল নারিনের উইকেট হারিয়ে। নারিন ৫ বলে ১০ রান করে সেট হবার চেষ্টা করছেন। এরপর তো কুমিল্লার ড্রেমিং রুমে হতাশা ছড়িয়ে অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ২ রানেই ফেরত গেলেন। ৩৪ রানে ২ উইকেট হারানো কুমিল্লা দরকার একটি লম্বা জুটি।
সেটা গড়ে দিল লিটন আর জনসন। তৃতীয় উইকেটে জনসন মাত্র ৯ রানে বিশাল ক্যাচ হাতে নিয়ে নেচে নেচে মাটিতে পেলে দিলেন পেসার রুবেল, তখন লিটন ৪২ রানে ব্যাট করছেন। কুমিল্লার দলীয় স্কোর তখন ১০ ওভার শেষে ৮৬/২। তখনও কুমিল্লার দরকার ৬০ বলে ৯০ রান, হাতে আছে ৮টি উইকেট।
জনকন আউট হলেন না কিন্ত লিটন ৩৯ বরে ৫৫ রানে ফিল্ডার শান্তর হাতে ধরা পড়লে চাপে পড়ে। লিটন ৫৫ রানে ফেরত গেলেন তখন জনসন ৩৩ রানে ব্যাট করছেন। সঙ্গী হিসেবে পেলেন ইংলিশ ব্যাটার মঈন আলীকে। এই জুটি দেখে শুনে ব্যাট করছিল, স্কোর ১৬ ওভারে ১২৪/৩, প্রয়োজন ২৪ বলে ৫৪। ওভার প্রতি ১৩ রান দরকার ফাইনাল জিততে হলে।
কিন্তু সিলেটকে হতাশায় ডুবিয়ে ১৭তম ওভারে মঈন মারলেন ১ ছক্কা আর জনসন মারলেন ২ ছক্কা ও ১ বাউন্ডারি, এক ওভারে রান যোগ হলো ২৩! স্কোর ১৪৭/৩, এবার ১৮ বলে মাত্র ২৯ রান দরকার। ১৮তম ওভারে ৬ বলে যোগ হলো ৮ রান, স্কোর এবার ১৮ ওভার শেষে ১৫৫/৩।
শেষ ১২ বলে কুমিল্লার দরকার ২১ রান। ১৯তম ওভারে প্রথম আর দ্বিতীয় পর পর দুই বলে দুই বিশাল ছক্কা মারলেন জনসন, এই ওভারে জনসনের ব্যাট থেকে এলো ১৮ রান। শেষ ৬ বলে কুমিল্লা ২ দূরে শিরোপাকে ছূঁতে। ১৯.২ ওভারে জনসনের ব্যাট থেকে আনে সেই উনিং শট।
এর আগে সিলেট টস হেরেব্যাট করে জমা করে ১৭৫/৭। ওপেনি জুটিতে আসে মাত্র কিছু করার আগেই শূণ্য রানে আউট হলেন তৌহিদ হৃদয়। তবে টিকে থাকলেন শান্ত। পাশে পালেন অধিনায়ক মাশরাফিকে পিঞ্চ হিট করাতে। কিন্তু ৪ বলে ১ রানে আউট মাশরাফি। এরপর আরেক অভিজ্ঞ মুশফিকের সাথে জুটি বাঁধলেন শান্ত।
১০ ওভারে স্কোর ৭৯/২, এরপর ১২ ওভারে সিলেটের স্কোর ১০৪/২, তাতে শান্তর নামের পাশে অপরাজিত ৬৪ আর মুশির নামের পাশে অপরাজিত ৩১। ১৩ ওভারের শুরুতেই শান্ত ৬৪ রানেই বোল্ড আউট। মুশির সাথে জুটি হল রাইয়ান, পেরেরা আর জাকির। কেউ কিছুই করতে পারল না।
মুশফিকের একক চেষ্টায় সিলেট স্কোর ২০ ওভারে ১৭৫/৭। তাতে মুশফিক অপরাজিত ৭৪।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : কুমিল্লা (ফিল্ডিং)
সিলেট : ১৭৫/৭ (২০ ওভার)
কুমিল্লা : ১৭৬/৩ (১৯.২ ওভার)
