দূরন্ত বিডি ডটকম -----------স্বাগতম ২০২৫------------মানবতার কথা বলে ---------- durontobd.com--------ফ্যাসিবাদ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, “জুলাই” মনে রেখে ভোটের নিশ্চয়তা চাই, অর্থনৈতিক মুক্তি চাই। দৌলতবাড়ির শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল জয়—ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় শীর্ষে চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসা - durontobd

সংবাদ শিরোনাম

.jpg

Tuesday, 11 November 2025

দৌলতবাড়ির শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল জয়—ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় শীর্ষে চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসা


জহির শাহ্ | ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষাঙ্গনে এখন এক অদ্ভুত আনন্দের আলো। বিজয়নগর উপজেলার গর্ব, দৌলতবাড়ি চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসা—ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত জাতীয় শিশু-কিশোর ইসলামী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা–২০২৫-এর উপজেলা পর্যায়ে অর্জন করেছে প্রথম স্থান। এটি শুধু একটি জয় নয়, বরং প্রমাণ—আলোর দিশা এখন দৌলতবাড়িতেই।


১০ নভেম্বর উপজেলা মডেল মসজিদের চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিযোগিতাটি। পুরো আয়োজনটি যেন এক পবিত্র মঞ্চে রূপ নেয়, যেখানে প্রতিযোগিতা নয়, বরং আধ্যাত্মিকতা ও শিল্পের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটে। ক্বিরাত, হামদ-নাত, আজান, ইসলামী জ্ঞান, রচনা, এবং উপস্থিত বক্তৃতা—প্রতিটি পর্বেই দৌলতবাড়ির শিক্ষার্থীরা দেখিয়েছে এমন পারদর্শিতা, যা কেবল অনুশীলনের নয়, বরং আত্মার নিষ্ঠা ও হৃদয়ের ত্যাগের ফল। তাদের সুরেলা কণ্ঠে হামদ-নাত যখন গুঞ্জরিত হচ্ছিল, তখন বাতাসও যেন থেমে গিয়েছিল শ্রদ্ধায়।


পরের দিন, ১১ নভেম্বর, পুরো মাদ্রাসা প্রাঙ্গণ রূপ নেয় এক উৎসবমুখর অঙ্গনে। আয়োজন করা হয় এক উষ্ণ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের, যেখানে প্রতিটি মুখে ছিল গর্বের হাসি ও কৃতজ্ঞতার দীপ্তি। সভাপতির আসনে ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সুপরিচিত সুপারিন্টেন্ডেন্ট মুফতি সুফি আমির হোসাইন, যিনি তাঁর প্রজ্ঞা, দিকনির্দেশনা ও নিরলস পরিশ্রমে প্রতিষ্ঠানটিকে পৌঁছে দিয়েছেন উৎকর্ষের শিখরে।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক, লেখক ও শিক্ষানুরাগী জহির শাহ্—যাঁর নাম এখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রেক্ষাপটে এক অনুপ্রেরণার প্রতীক। তাঁর প্রাণবন্ত বক্তৃতায় তিনি বলেন,“এই শিক্ষার্থীরাই আমাদের আগামী দিনের আশার আলো। তারা শুধু প্রতিযোগিতায় নয়, জীবনেও ইসলামী মূল্যবোধের দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক—এই প্রার্থনাই আমার।”


তাঁর কণ্ঠে ছিল শিক্ষকের গভীর ভালোবাসা, সাংবাদিকের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ও এক আলোকিত ভবিষ্যতের বার্তা।


অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বেই দৌলতবাড়ির শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছে। ক্বিরাতের তিলাওয়াতে ছিল কুরআনের পবিত্র সুর; হামদ-নাতে ছিল ঈমানের দীপ্তি; বক্তৃতায় ছিল যুক্তির জ্যোতি ও কলমের শুদ্ধতা। প্রতিটি পরিবেশনায় দর্শক-শ্রোতারা করতালির ঝড় তুলেছেন, যেন প্রতিটি শব্দেই তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন আল্লাহর মহিমার ছোঁয়া।


অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে সকলেই কণ্ঠ মিলিয়েছেন শিক্ষার্থীদের অব্যাহত সাফল্যের জন্য। তাদের জন্য কামনা করা হয় জ্ঞান, নৈতিকতা ও ঈমানের দীপ্তিময় ভবিষ্যৎ।


দৌলতবাড়ি চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসার এই অর্জন শুধু একটি ট্রফি বা সনদের গর্ব নয়—এটি এক দৃষ্টান্ত, যা গোটা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শিক্ষাঙ্গনকে নতুন করে ভাবতে শেখায়। মাদ্রাসাটি এখন এক জীবন্ত প্রমাণ—ধর্মীয় শিক্ষা কেবল নামাজ-রোজা শেখায় না, এটি শেখায় সৌন্দর্য, শৃঙ্খলা ও আত্মপ্রকাশের কলা।


আর এই উজ্জ্বল সাফল্যের নেপথ্যে যিনি ছায়ার মতো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রেরণা দিয়েছেন, তিনি শিক্ষক ও সাংবাদিক জহির শাহ্—যাঁর নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ও অক্লান্ত সহযোগিতা আজ দৌলতবাড়িকে করেছে আলোকিত এক প্রতীক।


শেষে বলা যায়, দৌলতবাড়ি চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসার এই বিজয় শুধু একটি অঞ্চলের নয়, এটি সমগ্র ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হৃদয়ে গর্বের উজ্জ্বল ছাপ রেখে গেল।

যেখানে তরুণদের চোখে এখন একটাই স্বপ্ন জ্বলজ্বল করছে—

“জ্ঞানই আলো, আর সেই আলোর নাম দৌলতবাড়ি চিশতিয়া দাখিল মাদ্রাসা।”